Thank you for trying Sticky AMP!!

রাতে হাসপাতালের বারান্দায়, দিনে শহীদ মিনারের বেদিতে

অসুস্থ ছেলে মকবুলকে নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে হাবিবুর রহমান। ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি। ছবি: আবদুস সালাম

ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে পাটি বিছিয়ে শুয়ে আছেন হাবিবুর রহমান। তাঁর পাশে ব্যাগে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে মকবুল হোসেন। কিশোর মকবুলের চোখের পাতাগুলো ফুলে আছে। সাংবাদিক দেখে উঠে বসেন হাবিবুর রহমান। তাঁর চোখে-মুখে ক্লান্তি ও ভয়ের ছায়া। কথা হলো তাঁর সঙ্গে। হাবিবুর প্রথম আলোকে জানালেন, তাঁদের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায়। ছেলে মকবুলের ঊরুতে টিউমার ধরা পড়েছে। তিনি আরও জানালেন, চিকিৎসকেরা টিউমারটিকে ক্যানসার ধারণা করছেন।

নরসিংদীতে অনেক দিন চিকিৎসা করিয়ে কোনো লাভ না হওয়ায় গতকাল শনিবার সকালে মকবুলকে নিয়ে ঢাকা এসেছেন হাবিবুর রহমান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে জানতে পেরেছেন, এখানকার চিকিৎসক মকবুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট দেখবেন কাল সোমবার। ঢাকায় তাঁদের কোনো আত্মীয়স্বজনও নেই। হোটেলে থাকারও সামর্থ্য নেই। তাই হাসপাতালের বাইরের বারান্দায় রাত কাটাচ্ছেন তাঁরা। আর দিনের বেলা থাকছেন শহীদ মিনারের বেদিতে।

হাবিবুর জানান, ছয় মাস আগে মকবুলের ঊরুতে ব্যথা শুরু হয়। শেষে টিউমার ধরা পড়ে। টিউমারের কারণে মকবুলের এবার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হচ্ছে না। ছেলের চিকিৎসায় হাবিবুরের এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। ঋণ করে চিকিৎসার ব্যয় মেটানো সম্ভব না হওয়ায় বাড়ির একমাত্র গরুটিও তাঁকে বিক্রি করে দিতে হয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘এখন আছে শুধু ভিটাটা। তাও বিক্রি কইরা দিমু। পুতের আশা করি, জমির আশা নাই। ছেলে ভালো হইলে ছেলেই খাওয়াইবো।’

হাবিবুর অন্যের জমিতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। তাঁর দুই ছেলের মধ্যে মকবুল বড়। ছোট ছেলেটিও স্কুলে পড়ে। মকবুলকে নিয়ে হাবিবুরের অনেক স্বপ্ন। হাবিবুর কথার বলার একপর্যায়ে মকবুল উঠে বসে। জানাল, উত্তর বাখরনগর ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সে। আরও বলল, ‘আমি কমার্স নিছি। পড়ালেখা শেষে আমি ব্যাংকে চাকরি করতে চাই।’