Thank you for trying Sticky AMP!!

'রিও'কে উদ্ধারে রবিনহুড

চার তলার কার্নিশে আটকে পড়ে আছে রিও। ছবি: প্রথম আলো

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসের মূল ভবনের চারতলায় থাকত রিও। বিড়ালটি কারও পোষা ছিল না। তবে হলের বারান্দাতেই থাকত। সেই বিড়াল কোনোভাবে আটকা পড়েছিল চারতলার কার্নিশে। তবে শিক্ষার্থীদের মায়াবঞ্চিত হয়নি প্রাণীটি।

গতকাল সোমবার রাত থেকেই বিড়ালটিকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না শিক্ষার্থীরা। রাতে ডাকাডাকি শুনে সবাই খেয়াল করেন, বিড়ালটি মূল ভবনের চারতলার কার্নিশে আটকা পড়ে আছে। বিড়ালটি কোনোভাবে জানালার গ্রিল গলে কার্নিশে নেমে যায়, কিন্তু ফেরার কোনো পথ পাচ্ছিল না।

উদ্ধার করতে জানালা দিয়ে নামছেন রবিনহুড। ছবি: প্রথম আলো

শিক্ষার্থী মাকসুদ আর নিলয় প্রথমে ভোররাত চারটা নাগাদ বালতি দড়িতে বেঁধে তাকে ওঠানোর চেষ্টা করেন। সকালে উঠে তাঁরা আবার বস্তা নিয়ে এসে রিওকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনোভাবেই উদ্ধার করা যাচ্ছিল না। শিক্ষার্থীরা জানান, সে খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তাঁদের ধারণা, বিড়ালটি হয়তো দুদিন ধরে এই কার্নিশে আটকে পড়ে ছিল। খেতে না পেয়ে দুর্বল হয়েছে।

রাতেই ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহদি ইসলাম পাশের একটি ভবন থেকে বিড়ালের ওই অবস্থার কয়েকটি ছবি তুলে RobinHood the animal rescuer (Animal welfare of Bangladesh) নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেন। পরে এই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা দুপুরে এসে প্রায় এক ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে বিড়ালটিকে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে কথা হয় রবিনহুড, দ্য অ্যানিমেল রেসকিউয়ারের ফাউন্ডার এবং কো–চেয়ারম্যান আফজাল খানের সঙ্গে। তিনি রবিনহুড নামে বেশি পরিচিত। তিনি বলেন, ‘প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় বিড়ালটি উদ্ধার করি। এ জন্য আমার চারতলার বাথরুমের জানলা থেকে পাইপ বেয়ে নিচের দিকে কার্নিশে নামতে হয়েছে। উদ্ধারকাজে সংগঠনের মোট তিনজন অংশ নেন।’

রবিনহুডকে দেখেই ভয়ে সরে যায় রিও। ছবি: প্রথম আলো

আফজাল খানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১০ সাল থেকে আহত, বিপন্ন কুকুর-বিড়ালসহ অবহেলিত প্রাণীদের সেবা দিয়ে আসছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত জায়গা থেকে, যেমন: বহুতল ভবন, মাটির ভেতর, পাইপের ভেতর, সুয়ারেজের ভেতর আটকে পড়া প্রাণীদের উদ্ধারে আমাদের রবিনহুড অ্যানিমেল রেসকিউয়ার ফেসবুক গ্রুপে সাহায্যের জন্য আবেদন করেন অনেকে। এরপর আমরা সদলবলে সেখানে চলে যাই।’ তিনি জানান, তাঁদের সামগ্রিক কার্যক্রমকে সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য তাঁরা এটাকে অ্যানিমেল কেয়ার ট্রাস্ট বাংলাদেশ নামে নিবন্ধন করেছেন। আর এর মাধ্যমে তাঁরা এই পর্যন্ত ছয় শর বেশি আহত, অসুস্থ ও অবহেলিত কুকুর-বিড়ালকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়েছেন।

সম্প্রতি ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস ‘৯৯৯’–এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ শুরু করতে যাচ্ছে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

ঝুঁকিপূর্ণ কার্নিশে সাবধানে এগিয়ে যান আফজাল খান। ছবি: প্রথম আলো
ধীরে সুস্থে রিও’কে ধরার প্রস্তুতি নেন তিনি। ছবি: প্রথম আলো
প্রথমে আদর করে, পরে ধরে ফেলেন রিওকে। ছবি: প্রথম আলো
রিও লাফালাফি করলেও সাবধানে তোলা হয় তাকে। ছবি: প্রথম আলো
ব্যাগে ভরা হচ্ছে রিওকে। ছবি: প্রথম আলো
আরেক স্বেচ্ছাসেবী সতর্ক ছিলেন রবিনহুডের সহায়তার জন্য। ছবি: প্রথম আলো
উদ্ধার কাজে উঁচু দেয়াল বেয়ে ওঠা-নামায় আহত হয় রবিনহুডও। ছবি: প্রথম আলো