Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল

ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুমে’ অচেতন শিক্ষার্থী, তদন্তে কমিটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুম’ কর্মসূচি চলাকালে অতিরিক্ত গরমে এক শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়েছিলেন। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বিজয় একাত্তর হলে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নিয়ামুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

‘গেস্টরুম’ কর্মসূচিতে থাকা একাধিক শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, নিয়ামুল ইসলামকে ‘গেস্টরুমে’ অনেকক্ষণ ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন ছাত্রলীগের ‘বড় ভাইয়েরা’। প্রচণ্ড গরমে শারীরিক অস্বস্তির কথা জানান নিয়ামুল। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাতে কর্ণপাত করেননি। একপর্যায়ে নিয়ামুল অচেতন হয়ে পড়ে যান। পরে সহপাঠীরা তাঁকে উদ্ধার করে গণরুমে নিয়ে যান। সহপাঠীরা নিয়ামুলের মাথায় পানি দেন। এ ঘটনা যেন জানাজানি না হয়, সে জন্য তাঁকে হাসপাতালে নিতে নিষেধ করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

তবে নিয়ামুল এখন সুস্থ আছেন। তিনি বলেন, ‘গরমের কারণে আমি “গেস্টরুমে” মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম। তখন বন্ধুরা আমাকে ধরাধরি করে গণরুমে নিয়ে এসে মাথায় পানি দেয়। এখন আমি সুস্থ আছি।’

এ বিষয়ে বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বি আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কিছু ছেলেপেলে এক জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছিল। তখন একটা ছেলে একটু মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তখন বন্ধুরা তাকে ডাবের পানি খাইয়ে তার কক্ষে রেখে আসে। তাকে হাসপাতালেও নিতে হয়নি, কোথাও নেওয়া হয়নি, কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিও ছিল না।’

এদিকে এ ঘটনা তদন্তে আজ বুধবার তিন সদস্যের কমিটি করেছে বিজয় একাত্তর হল প্রশাসন। হলের আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ শাহ মিরানকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আবাসিক শিক্ষক মোহা. জাহাঙ্গীর হোসেন ও আবু হোসেন মুহাম্মদ আহসান।

হলের প্রাধ্যক্ষ আবদুল বাছির বলেন, তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Also Read: নবীন শিক্ষার্থীদের আতঙ্ক ‘গেস্টরুম’

উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হলগুলো ছাত্রলীগের বিভিন্ন পক্ষের নিয়ন্ত্রণে। তাদের অধীনেই হলে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের। বিশেষ করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ-নিয়ন্ত্রিত ‘গণরুমে’ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে ছাত্রলীগের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে হয়। ‘অবাধ্য’ শিক্ষার্থীদের ‘বিচার’ ও আদবকায়দা শেখানোর নামে মানসিক নিপীড়ন (কখনো কখনো শারীরিকও) করা হয় হলের অতিথিকক্ষে। এটাই ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুম’ কর্মসূচি নামে পরিচিত।