Thank you for trying Sticky AMP!!

হাইকোর্ট

আবাসন প্রকল্পের জন্য মাটি ভরাটসহ সব কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা  

ঢাকার সাভারে রাজউকের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) মূল বন্যা প্রবাহ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত তিন মৌজায় আবাসন প্রকল্পের জন্য মাটি ভরাট ও প্লট বিক্রয়সহ সব কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নির্দেশ প্রতিপালন বিষয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকার জেলা প্রশাসককে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

সাভারের ওই তিন মৌজা হলো ইয়ারপুর ইউনিয়নের ইছরকান্দি, মনোসন্তোষ ও সাতাইশকান্দি। স্থানীয়ভাবে ওই এলাকা ‘গজাইরার বিল’ হিসেবে পরিচিত।

আইন লঙ্ঘন করে ও অনুমোদন ছাড়াই আবাসন কোম্পানি উত্তরণ প্রোপার্টিজ লিমিটেড ও অ্যাচিভ করপোরেশন কর্তৃক ওই জলাশয় ভরাট বন্ধে এবং বিলটি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ওই রিটটি করে।

আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

দুই আবাসন কোম্পানির মাটি ভরাট থেকে ওই তিন মৌজায় অবস্থিত মূল বন্যা প্রবাহ এলাকা রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা আইনের পরিপন্থী হওয়ায় কেন তা অবৈধ, আইনবহির্ভূত ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন, বিধি ও পরিকল্পনা অনুযায়ী উল্লেখিত মূল বন্যা প্রবাহ এলাকা পুনরুদ্ধার ও রক্ষার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব, কৃষিসচিব, ভূমিসচিব, পরিবেশসচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উত্তরণ প্রোপার্টিজ লিমিটেড এবং অ্যাচিভ করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বেলা জানায়, ইছরকান্দি, মনোসন্তোষ ও সাতাইশকান্দি মৌজায় প্রায় ৬০০ একর আয়তনের বিলটি স্থানীয়ভাবে ‘গজাইরার’ বিল নামে পরিচিত। বিলের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৪ কিলোমিটার। এলাকাটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) মূল বন্যা প্রবাহ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। বিলটি বর্ষাকালে পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এ বিলে এখনো দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।

বেলার তথ্য অনুসারে, বিলটির ওপর নির্ভরশীল প্রায় ১৪টি গ্রামের কৃষক ও মৎস্যজীবী। বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এ বিল বর্তমানে নানামুখী হুমকির সম্মুখীন। নির্বিচার এ বিলের জলাশয় ও কৃষি উপযোগী নিচু জমি ভরাট করা হচ্ছে আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য। এরই মধ্যে আবাসন কোম্পানি উত্তরণ প্রোপার্টিজ লিমিটেড বিলের ইছরকান্দি, মনোসন্তোষ ও সাতাইশকান্দি মৌজায় প্রায় ২৫০ বিঘা এবং অ্যাচিভ করপোরেশন বিলের সাতাইশকান্দি মৌজায় প্রায় ২২০ বিঘা উর্বর জমিতে কোম্পানির সাইনবোর্ড স্থাপন করেছে যার, কোনোটিরই নেই বৈধ অনুমোদন।