Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনায় ২১২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৩ হাজারের বেশি

বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে আইসিইউ ফাঁকা না পেয়ে করোনায় আক্রান্ত বিলকিস বেগম নামের এই নারীকে লক্ষ্মীপুর থেকে সম্প্রতি নিয়ে আসা হয় রাজধানীর মহাখালীতে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে

করোনাভাইরাস সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ) দেশে আরও ২১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৮৬২ জন।

আজ শুক্রবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আগের দিনের তুলনায় আজ করোনায় মৃত্যু ও রোগী শনাক্ত কমেছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৪৫ হাজার ৪৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ২৩৯ জনের। ওই সময় রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১৫ হাজার ২৭১ জন। রোগী শনাক্তের হার ছিল ২৯ দশমিক ২১ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব মিলিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪০ হাজার ১১৫ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ২০ হাজার ৪৬৭ জনের। আর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৫ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৯৭৫ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন ৫৩ জন, খুলনা বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। বাকিরা অন্যান্য বিভাগের।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ।

এরপর বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ কমবেশি হলেও প্রায় দুই মাস ধরে দেশে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু কয়েক গুণ বেড়েছে।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ দেশে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ পালন করা হয়। এ সময় সব ধরনের অফিসের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। ২১ জুলাই ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই বিধিনিষেধ আট দিনের জন্য শিথিল থাকার পর ২৩ জুলাই থেকে আবার দুই সপ্তাহের লকডাউন চলছে।

ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষের শহর থেকে গ্রামে যাওয়া এবং তাদের ফিরে আসায় সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় কারিগরি কমিটি ঈদ ঘিরে বিধিনিষেধ শিথিলের সরকারি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সর্বশেষ তথ্যানুসারে, করোনার ডেলটা ধরনের কারণে বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও ব্যাপক বেড়েছে। বিশ্বে গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে মৃত্যু বেড়েছে ২১ শতাংশ। আঞ্চলিকভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সংক্রমণ নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। এভাবে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিশ্বে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৯ কোটি ৫৮ লাখ ৮৬ হাজার ৯২৯ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৪১ লাখ ৮৯ হাজার ১৪৮ জনের।

ডব্লিউএইচও বলেছে, সাত দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চসংখ্যক নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেওয়া তথ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দীর্ঘ দিন পরে দৈনিক শনাক্তের তালিকায় প্রথম স্থানে উঠে এলো দেশটি। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে (তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু)।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ইন্দোনিশয়ায়, ১ হাজার ৮৯৩ জনের। এই সময়ে দেশটিতে রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪৩ হাজার ৪৭৯ জন (তৃতীয়)।

একই সময়ে শনাক্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪৩ হাজার ৫০৯ জন। এই সময়ে দেশটিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ৬৪০ জনের।

বর্তমানে করোনাভাইরাসের চারটি মিউটেশন (রূপান্তর) বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এই ধরনগুলো ‘ব্যাপক উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘের এই সংস্থা। তারা বলেছে, এ পর্যন্ত আলফা ধরন ১৮২টি দেশে, বিটা ১৩১টি দেশে, গামা ৮১টি দেশে এবং ১৩২টি দেশে ডেলটা ধরন শনাক্ত হয়েছে। গত সপ্তাহে আরও আটটি নতুন দেশে ডেলটা সংক্রমণ শনাক্ত হয়।