Thank you for trying Sticky AMP!!

গিয়ারাটানো যেভাবে করোনামুক্ত হলেন

কুইন্সের হাওয়ার্ড বিচ এলাকার ৪২ বছর বয়স্ক জন গিয়ারাটানোর শরীরে ৬ মার্চ জ্বর অনুভব করেন। দিনটি শুক্রবার ছিল। তিনি ও তার সঙ্গী ব্রায়ান জোপেনিক তখন করোনারভাইরাসের কথা ভাবেননি। জনের কোভিড-১৯ চেক করাতে হবে, তেমন চিন্তা মাথায় আসেনি।
৮ মার্চ রোববারে জোপেনিক বলেন, কোন কাশি বা শ্বাসকষ্ট নেই। ৯ মার্চ ফ্রিল্যান্স টিভি প্রযোজক গিয়ারাটানোর গায়ে ১০২ মাত্রায় জ্বর হয়। গিয়ারাটানো ও জোপানিক দুজনই চিন্তা করলেন স্বাভাবিক জ্বর হয়েছে। মাঝেমধ্যে হয়। ঠিক হয়ে যায়।

১০ বছর থেকে পরস্পরের সঙ্গে আছেন দুজন। ভ্রমন করছেন বিশ্বের নানা দেশ। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে দুজনেরই মোটামুটি ধারণা আছে। জোপানিক জানান, শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট না হলে ইমার্জেন্সি রুম এড়িয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ।
১১ মার্চ গিয়ারাটানোর জ্বর বেড়ে ১০৩.৬ মাত্রায় ওঠে। পরদিন সকালে তিনি হাওয়ার্ড বিচের আর্জেন্ট কেয়ারে যান। সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা তার ফ্লু বা নিউমোনিয়া হয়েছে বলে জানান। ১৪ মার্চ রাতে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন হতে থাকে গিয়রাটানোর। কাশিও শুরু হয়।

১৩ মার্চ ভোরে গিয়ারাটানোর ওশানসাইডে যান। সেখানে মাউন্ট সানাইয়ের জরুরি বিভাগের শরণাপন্ন হন। একটি এক্সরের মাধ্যমে নিউমোনিয়া নিশ্চিত হয়। তার দেহে জ্বর উঠা শুরু হওয়ার সাত দিন হলো। শেষ পর্যন্ত তার কভিড-১৯ পরীক্ষার সময় এলো। তাও ফলাফলের জন্য তার কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে।
১৪ মার্চ সকাল থেকে গিয়ারাটানোর রক্তে অক্সিজেন ঘাঠতি দেখা দেয়। জোপেনিক বলেন, গিয়ারাটানোর ‘আন্ডার-লাইং’ কোন স্বাস্থগত অবস্থা ছিল না।
১৫ মার্চ মধ্যরাত ১২টা ৩০ মিনিট। গিয়ারাটানোর শ্বাসনালী দিয়ে পাইপ ঢুকানো হয়। তাঁর নিশ্বাস নিতে সাহায্যের প্রয়োজন হয়। ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে তা করা হয়। জোপেনিক বলেন, তার শ্বাসযন্ত্রে ইনফেকশন হয়েছিল। ভেন্টিলেটর ব্যবহারের পর থেকে ইনফেকশন আরও বাড়তে থাকে। দ্রুত অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

ডাক্তাররা তখন তাকে এন্টি-ভাইরাস ওষুধ দেন। তবে কোভিড-১৯ ইতিবাচক পাওয়ার পর ডাক্তাররা তাকে আরও শক্তিশালী ওষুধ দিতে চেয়েছেন। গিয়ারাটানোর টেস্ট যে ল্যাবে হচ্ছিল, তা নিউজার্সিভিত্তিক। কিন্তু জোপেনিক জানতে পেরেছেন, গিয়ারাটানোর সেম্পল পাঠানো হয় নর্থ ক্যারোলিনার একটি ল্যাবে।
জোপেনিক বলেন, আমি তার নমুনা টেষ্টিং-এর পুঙ্খানুপুঙ্খ খোঁজ রাখছিলাম। ফলাফল ১৬ মার্চ চলে আসার কথা। তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। টেস্ট রেজাল্ট ১৮ তারিখও আসল না। বিলম্বিত হতে থাকে।

মাউন্ট সানাইয়ের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আরেক কর্মকর্তা, যিনি সংক্রামক ব্যাধি কেন্দ্রের প্রধান পর্যন্ত পৌঁছান। অবশেষে গিয়ারাটানোর চিকিৎসা শুরু হয়। এবার একজন করোনা রোগী হিসেবে।
সে পর্যায়ে টেস্ট-রেজাল্ট ছাড়াই। মাউন্ট সানাইয়ের প্রেসিডেন্টের সহায়তায় রেজাল্ট আসে। ১৯ মার্চ বিকেলে। গিয়ারাটানো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।
সেদিন গিয়ারাটানোকে ‘রিমডেসিভির’ নামের ওষুধটি দেওয়া হয়। এ ওষুধটি ‘গিলয়াড সায়েন্সেস’ আবিষ্কার করেছিল। ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় এই ওষুধ। গিয়ারাটানোর অবস্থা ১৯ মার্চ সংকটপূর্ণ ছিল। তবে অবনতি আর হয়নি।
২০ মার্চ সকালে জোপেনিক জানান, তার অবস্থা আশাব্যঞ্জক। আমি ইতিবাচক ভাবতে শুরু করি। প্রার্থনা করতে থাকি। নানা গ্রুপে গিয়ারাটানোর জন্য প্রার্থনা করা হয়। যেসব ডাক্তার ও নার্স তাকে সেবা দিয়েছেন। জন গিয়ারাটানোর মত অন্যদেরও তারা সার্ভিস দিচ্ছেন।