Thank you for trying Sticky AMP!!

নিজে নিজে স্টেরয়েড নয়

নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের স্বীকৃত কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি এখনো নেই। ওষুধ ও প্রতিষেধক আবিষ্কারে বিজ্ঞানীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। কাজেই করোনার চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত যেসব ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে, তা মূলত উপসর্গের ভিত্তিতে। এই ওষুধগুলোয় নতুন সংযোজন ডেক্সামেথাসন বা স্টেরয়েড। তবে এটি করোনা সংক্রমিত গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জন্যই কেবল ব্যবহারের উপযোগী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলেছে, শুধু করোনায় সংক্রমিত গুরুতর রোগীদের চিকিৎসায় এই ওষুধ কাজে আসতে পারে।

ডেক্সামেথাসন নতুন কোনো ওষুধ নয়। শ্বাসকষ্টজাতীয় সমস্যার ক্ষেত্রে, হাঁপানি বা ব্রংকাইটিসে আগে থেকেই এ ওষুধ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ ছাড়া অ্যালার্জি, বাতজনিত কিছু রোগ, অটোইমিউন ডিজিজে ওষুধটির ব্যবহার ব্যাপক। জীবন রক্ষাকারী ওষুধ বলে রোগীর সংকটাপন্ন অবস্থায় জীবন বাঁচানোর জন্য এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।

ডেক্সামেথাসন একধরনের হরমোন। এর ব্যাপক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। কাজেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ কোনোভাবেই ব্যবহারযোগ্য নয়। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে উচ্চ রক্তচাপ, রক্তের শর্করা আকস্মিক বেড়ে যাওয়া, ওজন বৃদ্ধি, কিডনি ও যকৃৎ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারও কারও পেপটিক আলসার, চোখের সমস্যা, এমনকি মানসিক সমস্যা বা সাইকোসিসও হতে পারে। এ ছাড়া শরীরে কোনো ধরনের সংক্রমণ থাকলে তার তীব্রতা বাড়িয়ে দিতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গিয়ে জটিল ধরনের সেপসিস, ওষুধপ্রতিরোধী যক্ষ্মাসহ আরও নানা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে শুধু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ ব্যবহারের নির্দেশনা আছে। কেউ যদি শুরুতেই ডেক্সামেথাসন ব্যবহার করেন, তাহলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গিয়ে জটিলতা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। সংক্রমণের আগে অথবা উপসর্গ দেখা দেওয়ার প্রথম সাত দিনের মধ্যে ডেক্সামেথাসন সেবন করলে ভাইরাসের সংখ্যা অস্বাভাবিক দ্রুত বেড়ে মৃত্যুঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। যাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাঁদের এগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এমনকি মৃত্যুঝুঁকিও তৈরি হতে পারে। কাজেই বাড়িতে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীর জন্য এই ওষুধ কিছুতেই ব্যবহারযোগ্য নয়। কাজেই নিজে নিজে স্টেরয়েড কখনোই সেবন করার কথা চিন্তা করবেন না।

লেখক: বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ