Thank you for trying Sticky AMP!!

অধ্যক্ষকে পুকুরে নিক্ষেপ: আরও ৪ আসামি গ্রেপ্তার

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদকে পুকুরে ফেলার মামলায় আজ মঙ্গলবার আরও ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । কিন্তু এজাহারে নাম থাকা কেউ এখনো ধরা পড়েনি। তাঁদের গ্রেপ্তারে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনেছেন সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা অধ্যক্ষকে সহানুভূতি জানাতে তাঁর কার্যালয়ে যান। সেখানে তিনি মূল আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে। রাজশাহীতে তাঁদের খাতির করা হলেও ঢাকায় হবে না। বিষয়টি নিয়ে তিনি সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এবং শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘এই পলিটেকনিকে ছাত্রমৈত্রী নেতা সানিকে খুন করা হয়েছে। তাঁর রক্তের দাগ না মুছতেই মাত্রা অতিক্রম করে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করা হলো। এদের দমন করা এখন অপরিহার্য দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি ঢাকায় সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথা বলব, যেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা এ সময় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ওই ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া সংগ্রহ করেন ঘটনার সময়ের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ। এসব তিনি সংসদীয় কমিটি এবং শিক্ষামন্ত্রীকে দেখাবেন বলে জানিয়েছেন।

মিডটার্মে অকৃতকার্য ও ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে গত ২ নভেম্বর সকালে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনের কার্যালয়ে গিয়ে চাপ দেয় ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। এ নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে ওই দিন দুপুরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার পর টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৫০ জনকে আসামি করে ওই রাতে নগরের চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেন অধ্যক্ষ।

এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্তরা এখনো অধরা। এ ব্যাপারে নগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, এজাহারভুক্তরা ধরা পড়েনি। সিসি টিভির ফুটেজ দেখে সর্বশেষ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলার ঘটনায় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। গত ৭ নভেম্বর কমিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রওনক মাহমুদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়। রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে ঘটনাটি তদন্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি।

একই সঙ্গে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগের কমিটি এবং তাদের সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তবে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ দাবি করেছেন ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের শুধু একজনই জড়িত। তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যরা সব বহিরাগত।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ বলেন, যারা তাকে লাঞ্ছিত করেছে তারা সবাই ছাত্রলীগের পলিটেকনিক শাখার সভাপতির সঙ্গে সব সময় থাকে। পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকেরাও এখন এই প্রতিষ্ঠানে ছাত্র নয়। তারা পাস করে বেরিয়ে গেছে। হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যরা যদি বহিরাগত হয় তাহলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককেও বহিরাগত হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।