Thank you for trying Sticky AMP!!

অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে হাতুড়িপেটা

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধ্যক্ষ মাহাতাব উদ্দিন। ছবি: আনোয়ার পারভেজ

বগুড়ার গাবতলী শহীদ জিয়া মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ও দুই শিক্ষককে হাতুড়ি দিয়ে বেদম পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিনদুপুরে দলবল নিয়ে কলেজে ঢুকে এ হামলা চালান উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এ টি এম নুরুল হুদা ওরফে সুমন। তাঁর বাবা জেপির (মঞ্জু) কেন্দ্রীয় নেতা এবং সাবেক সাংসদ এ টি এম আমিনুল ইসলাম।

অধ্যক্ষকে মারধরের দৃশ্য দেখে মোটরসাইকেলযোগে পালাতে গেলে পথ আটকিয়ে হাতুড়িপেটা করা হয় দুই শিক্ষককে। অধ্যক্ষকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। দুই শিক্ষক বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন।

অধ্যক্ষ মাহাতাব উদ্দিন অভিযোগ করেন, গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ আযম খানকে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের দ্বিতীয় দফায় সভাপতি না করায় প্রথমে কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এরপর গতকাল বেলা সোয়া ১১টায় আটটি মোটরসাইকেলে করে শ্রমিক লীগ নেতা নুরুল আমিনের নেতৃত্বে ১৮-২০ জন নেতা-কর্মী কলেজে এসে ত্রাস সৃষ্টি করেন।

অধ্যক্ষের অভিযোগ, শ্রমিক লীগের ওই নেতা তাঁর কার্যালয়ে ঢুকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে হাতুড়ি দিয়ে হাঁটুতে, পায়ে, পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র বের করলে অন্য শিক্ষকেরা ভয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। পালাতে গেলে অর্থনীতি ও বাণিজ্যিক ভূগোল বিভাগের প্রভাষক মঞ্জুরুল ইসলাম এবং রসায়ন বিভাগের শিক্ষক রেজাউল হককেও হাতুড়িপেটা করা হয়। মঞ্জুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনিও গুরুতর আহত। ভয়ে সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন।

কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে অধ্যক্ষকে সরিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস নামের একজনকে ওই পদে বসান কলেজটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আযম খান। পরে ৮ অক্টোবর উচ্চ আদালতের আদেশে অধ্যক্ষ মাহাতাব উদ্দিন স্বপদে বহাল হন। নিয়মিত কমিটির মেয়াদ শেষে তিনি অ্যাডহক কমিটির জন্য রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভাপতির লোকজন অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। তালা খুলে মঙ্গলবার চেয়ারে বসতে গেলে হামলার ঘটনা ঘটে।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার বলেন, এই নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে হত্যাসহ তিন-চারটি মামলা রয়েছে। অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা দেওয়া হলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যোগাযোগ করা হলে নুরুল আমিন হাতুড়িপেটা করার কথা অস্বীকার করেন।

নুরুল আমিন বলেন, ‘কলেজে শিক্ষক নিয়োগের সময় একটি পদের বিপরীতে পাওয়া অর্থ শ্রমিক লীগকে দেওয়ার কথা ছিল। অধ্যক্ষ নিয়োগের সেই টাকার জামিনদাতা হয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে টাকা দেওয়ার ব্যাপারে টালবাহানা করছিলেন তিনি। গতকাল এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে অধ্যক্ষ আমাকে থাপ্পড় মারেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়।’

এ ব্যাপারে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আযম খানের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।