Thank you for trying Sticky AMP!!

অনুসন্ধান পর্যায়েই দুর্নীতির সম্পদ জব্দ হবে

দুদক

দুর্নীতির অনুসন্ধান চলাকালেই অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ জব্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে দুদকের একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে।

কয়েক বছর ধরে দুদকের উদ্যোগে মামলার তদন্ত পর্যায়ে কিংবা বিচার পর্যায়ে সম্পদ জব্দ করার ব্যবস্থা নেওয়া হতো। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল এডুকেশন শাখার হিসাবরক্ষক আবজাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী রুবিনা খাতুনের দুর্নীতির অনুসন্ধান পর্যায়েই ২১ জানুয়ারি তাঁদের সম্পদ জব্দ করে দুদক। সংস্থাটি বলছে, এখন থেকে কমিশন মনে করলে অনুসন্ধান পর্যায়েই সম্পদ জব্দের ব্যবস্থা নেবে।

সূত্র জানায়, কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে সংস্থার নবগঠিত ‘অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ইউনিট’-এর কার্যক্রম নিয়ে ওই জরুরি সভা হয়। সভায় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০০৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত অবৈধ সম্পদসংক্রান্ত চলমান এবং কমিশনের পক্ষে রায় হয়েছে, এমন মামলায় সম্পৃক্ত সব ধরনের অবৈধ সম্পদ ক্ষেত্র অনুযায়ী জব্দ, ক্রোক বা অবরুদ্ধ করা হবে। পরে মামলার তালিকা অনুযায়ী রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে কমিশনে উপস্থাপন করতে হবে। ইতিমধ্যেই যেসব মামলায় আসামিদের শাস্তির পাশাপাশি আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে অথবা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তা–ও রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেন কমিশনের চেয়ারম্যান।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, এখন থেকে প্রতিটি অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সম্পদ জব্দ বা ক্রোক করতে হবে। অবৈধ সম্পদ ভোগ করার সুযোগ কাউকেই দেওয়া হবে না। অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে আনার জন্য দুদক ব্যবস্থা নেবে। এসব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনো ধরনের দুর্নীতি, সম্পদের ক্ষতিসাধন কিংবা অব্যবস্থাপনার সুযোগ না থাকে, এমন একটি নীতিমালা প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব দেন চেয়ারম্যান। এ জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন-বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে একটি যৌথ সভায় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সম্পদ ব্যবস্থাপনা করা যায় কি না, তা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন। এসব সম্পদের যাঁরা জিম্মাদার হবেন, তাঁদের জবাবদিহির বিষয়টিও বিশেষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতির একটি পথ বন্ধ করে আরেকটি পথ কখনোই খুলতে দেওয়া যাবে না। সভায় তিনি আরও বলেন, অবৈধ সম্পদের মামলায় যেসব আসামি মারা গেছেন, কিন্তু অবৈধ সম্পদ রয়ে গেছে সেগুলোও ক্রোক, জব্দ বা বাজেয়াপ্ত করার জন্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সম্প্রতি একটি আলোচিত অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী সরকারি কর্মকর্তার প্রসঙ্গ টেনে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, তাঁর জব্দ করা ব্যাংক হিসাবের বাইরেও ব্যাংক হিসাব থাকতে পারে। তাই তাঁর সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইউনিটকে চিঠি দেওয়ার নির্দেশনা দেন।

সভায় একজন কর্মকর্তা কমিশনের বিভিন্ন অভিযান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দু-একটি নেতিবাচক মন্তব্য দুদক চেয়ারম্যানের দৃষ্টিগোচর করলে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, কমিশনের প্রতিটি অভিযান আইনানুগ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা হচ্ছে।

ওই সভায় কমিশনের অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ইউনিটের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির, গোয়েন্দা ইউনিটের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।