Thank you for trying Sticky AMP!!

অভয়াশ্রমে মাছ শিকার

শরীয়তপুরে পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। শনিবার জাজিরার বাবুরচর এলাকা থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

সরকারিভাবে নিষিদ্ধ করা হলেও শরীয়তপুরের পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে বেড়া দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করা হচ্ছে। বাঁশের সঙ্গে অবৈধ কারেন্ট জাল যুক্ত করে ছোট-বড় সব ধরনের মাছ ধরা হচ্ছে। এমনকি ইলিশের অভয়াশ্রমেও এভাবে মাছ ধরা হচ্ছে। এতে নদীতে নৌযান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি দেশি নানা প্রজাতির মাছের বংশবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের ৬৯ কিলোমিটার পদ্মা ও মেঘনা নদীর সীমানা রয়েছে। জাজিরা উপজেলার নাওডোবা থেকে গোসাইরহাট উপজেলার নলমুরি পর্যন্ত প্রবাহিত নদী জেলার মধ্যে পড়েছে। নদীর ওই অংশে সাড়ে ১৬ হাজার জেলে মাছ শিকারের সঙ্গে যুক্ত। গত বছর ৬৯ কিলোমিটার নদীতে ৫ হাজার ২৪০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ উৎপাদিত হয়েছে। এই অঞ্চলের নদীতে (পদ্মা ও মেঘনায়) সবচেয়ে বেশি ইলিশ মাছ উৎপাদিত হয়। ইলিশ ছাড়াও এখানে বোয়াল, আইর, পাঙাশ, বেলে, কাজলি, রুই, কাতল, চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।

ভেদরগঞ্জের তারাবনিয়া থেকে জাজিরার নাওডোবা পর্যন্ত পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে কারেন্ট জাল দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। ওই বেড়ার সাহায্যে নদীর ছোট (পোনাজাতীয় মাছ) ও বড় মাছ শিকার করা হচ্ছে। পোনা মাছ শিকার করায় মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ভেদরগঞ্জের তারাবনিয়া, দুলারচর, কাঁচিকাটা; নড়িয়ার চরমোহন, মনিরাবাদ, চরআত্রা, নওপাড়া; জাজিরার কুন্ডেরচর, বাবুরচর, পালেরচর ও পাইনপারা এলাকায় অন্তত ৩০টি বেড়া দেওয়া হয়েছে। বেড়াগুলো ৫০০ মিটার থেকে ১০০০ মিটার দীর্ঘ। নদীর তীর থেকে নদীর ভেতরের দিকে বেড়াগুলো থাকায় নৌযান চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত  নদীতে জাটকা (৯ ইঞ্চির ছোট ইলিশ) শিকার নিষেধ। ইলিশ বেড়ে ওঠার জন্য নড়িয়ার সুরেশ্বর থেকে ভেদরগঞ্জের তারাবনিয়া পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার নদী ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অভয়াশ্রমে সব ধরনের জাল ফেলা নিষেধ। জাজিরার কুন্ডেরচর ইউনিয়নের বন্দুকমারা এলাকার বাসিন্দা মোতালেব হোসেন বাবুরচর এলাকায় দুটি স্থানে পদ্মা নদীতে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করছেন। প্রতিদিন ৮০-৯০ হাজার টাকার মাছ পাওয়া যায়। মোতালেব হোসেন বলেন,‘আমরা ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে শ্রমিক নিয়ে নদীতে মাছ শিকার করি। কিন্তু চর পড়ে নদী সংকুচিত হয়ে আসছে। এ কারণে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করার উদ্যোগ নিয়েছি।’ 

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, ‘নদীতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মাছ শিকার করা যাবে না। পদ্মা নদীতে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করার বিষয়টি আমার জানা নেই।  উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খোঁজ নিয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’