Thank you for trying Sticky AMP!!

কান্নাকাটি করলেও হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরাসরি কিছু বলছেন না তাঁরা

আক্তার হোসেন

কুমিল্লা নগরের চাঙ্গিনী এলাকার ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন হত্যার ঘটনায় করা মামলার দুই আসামি বিল্লাল হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেনকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে আজ শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বিচারক তাঁদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

রিমান্ডে দুই আসামি পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা এ ঘটনার জন্য অনুতপ্ত ও কান্নাকাটি করলেও হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরাসরি কিছু বলছেন না বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর দক্ষিণ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জসিমউদ্দিন।

মামলার প্রধান আসামি কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলমগীর হোসেনসহ সাতজনকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

পূর্বশত্রুতার জেরে ১০ জুলাই দুপুরে কুমিল্লা নগরের চাঙ্গিনী এলাকায় মসজিদ থেকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে এনে শত শত লোকের সামনে আক্তার হোসেনকে তাঁর চাচাতো ভাইয়েরা রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় আরও ছয়জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আক্তার হোসেনের স্ত্রী রেখা বেগম বাদী হয়ে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় কাউন্সিলর আলমগীরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

ঘটনার দিনই মামলার তিন আসামি কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেনের তিন ভাই আমির হোসেন, বিল্লাল হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১১ জুলাই তাঁদের কুমিল্লার আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জসিমউদ্দিন। ১৪ জুলাই কুমিল্লার ৯ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নুসরাত জাহান আসামি বিল্লাল ও জাহাঙ্গীরকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। অপর আসামি আমির হোসেন অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে জেলগেটে দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদেশ দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার দুই আসামিকে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় আনা হয়। আজ শুক্রবার তাঁদের রিমান্ড শেষ হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, রিমান্ডে বিল্লাল ও জাহাঙ্গীর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অনুতপ্ত বলে জানিয়েছেন। তাঁরা কান্নাকাটি করছেন। এখন মানুষের সামনে ও আত্মীয়স্বজনের সামনে কীভাবে মুখ দেখাবেন, এটা নিয়ে অনুতপ্ত। কিসের থেকে কী হয়ে গেল এ নিয়ে তাঁরা কোনো কিনারা পাচ্ছেন না। তবে হত্যাকাণ্ড নিয়ে তাঁরা সরাসরি কিছু বলছেন না। কাল শনিবার কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলগেটে মামলার দ্বিতীয় আসামি আমির হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

মামলার বাদী রেখা বেগম বলেন, ‘আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই। আমার স্বামী তো রাজনীতি করত না। তাহলে তাঁকে কেন মরতে হবে? ঘটনার এক সপ্তাহ হয়ে গেল আলমগীর কাউন্সিলর ধরা পড়ল না। অন্য আসামিরাও গ্রেপ্তার হয়নি।’

মামলার ১০ আসামির মধ্যে সাত আসামি পলাতক। তাঁদের এক সপ্তাহেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এই সাত আসামি হলেন কুমিল্লা নগরের চাঙ্গিনী এলাকার প্রয়াত সুলতান আহমেদের ছেলে কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও কাউন্সিলর আলমগীর হোসেন, কাউন্সিলরের ভাই ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপসহকারী প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন, গুলজার হোসেন, গুলজারের ছেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও গুলজারের আরেক ছেলে তানভীর হাসান, সদর দক্ষিণ উপজেলার তুলাতুলি এলাকার মো. ইউনুসের ছেলে কাউছার আহমেদ এবং আমির হোসেনের ছেলে জোবায়ের হোসেন।

সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আক্তার হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাউন্সিলর আলমগীরকে গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য জোর প্রচেষ্টা চলছে।