Thank you for trying Sticky AMP!!

আত্মহত্যা করল ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ধর্ষণের শিকার হওয়া সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী খালেদা খাতুন (১৪) আত্মহত্যা করেছে। ধর্ষণের ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর গত শুক্রবার দুপুরে কীটনাশক পান করে সে। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতে সে মারা যায়।
ধর্ষণের অভিযোগে আটক খালেদার স্কুলের গ্রন্থাগারিক শহিদুল ইসলাম (৩৮) কারাগারে রয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর লজ্জায়-অপমানে খালেদা আর স্কুলে যায়নি। লোকলজ্জার ভয়ে নিজ পরিবারও তাকে নানাবাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল। ওই বাড়িতেই সে কীটনাশক পান করে।
খালেদা গোদাগাড়ী উপজেলার দিগরাম উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল। বাড়ি উপজেলার জৈটাবটতলা গ্রামে। আর কারাগারে আটক গ্রন্থাগারিক শহিদুলের বাড়ি একই উপজেলার জাহানাবাদ গ্রামে। গত ২ নভেম্বর রাতে গ্রামে একটি ধর্মীয় সভা হচ্ছিল। খালেদার পরিবারের সদস্যরা সভায় ছিলেন। বাসায় খালেদা একা ছিল। এ সুযোগে শহিদুল খালেদার বাসায় ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। তাঁরা শহিদুলকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। ওই ঘটনায় খালেদার মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এ ঘটনায় ৪ নভেম্বর ‘ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রথম আলোতে খবর প্রকাশিত হয়।
জানতে চাইলে খালেদার বাবা আলম হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে খালেদা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। স্কুলে যেতে পারত না। লোকজন নানা কথা বলত। এ জন্য তাকে উপজেলার বালিগ্রামে তার নানাবাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার দুপুরে সেখানেই সে কীটনাশক পান করে।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিপজুর আলম মুন্সি জানান, ছাত্রীর লাশের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার আত্মহত্যার ঘটনায় রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তদন্তে আত্মহত্যায় প্ররোচনার কোনো প্রমাণ পেলে গোদাগাড়ী থানায় ইতিপূর্বে দায়ের করা ধর্ষণের মামলার সঙ্গে নতুন ধারা যুক্ত করা হবে।
ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোদাগাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল লতিফ জানান, খালেদার ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন সম্প্রতি পাওয়া গেছে। তাতে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে।
খালেদাকে ধর্ষণের ঘটনায় ৪ নভেম্বর তার সহপাঠীরা সন্দেহভাজন অভিযুক্ত শহিদুলের বিচার চেয়ে স্কুলে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করে। এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
দিগরাম উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান বলেন, তিনি মেয়েটির আত্মহত্যার কথা শুনেছেন। গ্রন্থাগারিককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তাঁকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে।