Thank you for trying Sticky AMP!!

আদালতের রাস্তা বন্ধ করে গুদাম নির্মাণ

সুনামগঞ্জে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জন্য নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের সামনে রাস্তা বন্ধ করে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একটি গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আইনজীবীরা। এর প্রতিবাদে গতকাল রোববার বিক্ষোভও করেছেন আইনজীবীরা।

একই ঘটনায় আইনজীবীদের করা একটি মামলায় ওই গুদাম নির্মাণে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা এবং জেলা প্রশাসকসহ চারজনকে কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সুনামগঞ্জের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া গতকাল বিকেলে এই আদেশ দেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেছেন, ‘ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যে ভবন হচ্ছে, সেটি ২০১২ সালের সিদ্ধান্ত। নানা প্রক্রিয়ার পর এখন কাজ হচ্ছে। এটি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে যাওয়ার রাস্তায় নির্মিত হচ্ছে না। নকশাতে পরিষ্কার রাস্তার কথা উল্লেখ রয়েছে। সব কটিই সরকারের সম্পদ।’

গতকাল দুপুরে আইনজীবী সমিতি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাশেই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জন্য ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ তলা একটি ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিছুদিন হয় ওই ভবনের একেবারে সামনে এবং ভবনে যাওয়ার রাস্তায় ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একটি গুদাম ও দুর্যোগ প্রস্তুতি তথ্যকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলার পরও তিনি ওই ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করেননি। ভবনটি নির্মিত হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনের সৌন্দর্য নষ্ট হবে এবং সেখানে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে।

এর প্রতিবাদে গতকাল সকালে আইনজীবীরা জরুরি সাধারণ সভা করেন। এরপর বিক্ষোভ করে ওই গুদাম নির্মাণের জায়গায় যান। একই সময়ে সমিতির পক্ষ থেকে গুদাম নির্মাণের কাজ বন্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে একটি মামলা করা হয়। শুনানি শেষে আদালত ওই ভবন নির্মাণের কাজে স্থিতাবস্থা বজায় এবং চার বিবাদীকে কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সুনামগঞ্জের প্রবীণ আইনজীবী ও সমিতির সাবেক সভাপতি আপ্তাব উদ্দিন আহমদ, সমিতির বর্তমান সভাপতি মো. চান মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মো. সাহারুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

সাহারুল ইসলাম বলেন, সুনামগঞ্জের বিচারপ্রার্থী জনগণ, বিচারক ও আইনজীবীদের জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন নির্মিত হচ্ছে। এটি জেলার বিচারপ্রার্থী মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির ফল। গুদাম নির্মাণের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদালতের বিচারক ও আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। সভাপতি মো. চান মিয়া বলেন, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে ওই গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব গুদাম সড়কের পাশে হয়। আদালত প্রাঙ্গণে এটি হতে পারে না।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেন, ‘ভবন হচ্ছে সরকারের সিদ্ধান্তে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেভাবেই কাজ হবে। তারা যদি বলে এটি অন্যত্র করতে, সেটা করা হবে। এখানে আমার ব্যক্তিগত কোনো মত নেই।’

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গতকাল জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও আইনজীবীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করব।’