Thank you for trying Sticky AMP!!

আবরার হত্যায় বুয়েট ছাত্রলীগের দুই নেতা আটক, পলাতক তিন নেতা

আবরার ফাহাদ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে (২১) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আজ সোমবার সকালে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চকবাজার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আটক দুজন হলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন ৷ তাঁরা দুজনই বুয়েটের শিক্ষার্থী। তাঁরা বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে থাকেন।

গতকাল রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। 

হলের যে কক্ষে আবরার ছাত্রলীগ নেতাদের পিটুনির শিকার হন, সেই কক্ষের শিক্ষার্থীরা ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন৷

হলের কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভাষ্য, ওই কক্ষে চার শিক্ষার্থী থাকেন। তাঁদের মধ্যে যে তিনজন পলাতক, তাঁরা হলেন—বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র অমিত সাহা, উপদপ্তর সম্পাদক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মুজতাবা রাফিদ, সমাজসেবাবিষয়ক উপসম্পাদক ও বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ইফতি মোশারফ ৷ আরেকজন চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী, যিনি দুর্গাপূজার ছুটিতে দুই দিন আগে গ্রামের বাড়িতে গেছেন ৷

গতকাল দিবাগত রাতে বুয়েটের শের-ই বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ৷ পরে দিবাগত রাত তিনটার দিকে হল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

মারা যাওয়া আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে।

গতকাল রোববার দিবাগত রাতে আবরারকে হলের ভেতরে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। হলের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, শের-ই-বাংলা হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রাসেলের অনুসারী একদল নেতা-কর্মী আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন৷

হল শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, আবরারকে জেরা ও পেটানোর সময় ওই কক্ষে অমিত সাহা, মুজতাবা রাফিদ, ইফতি মোশারফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন ৷ ওই কক্ষে এসে দ্বিতীয় দফায় আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন৷ তাঁরা সবাই মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী।

বুয়েটের ছাত্র আবরার হত্যার বিচার চেয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল করছেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল বের হয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরেছে। মিছিল থেকে স্লোগান আসছে, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ (আমরা বিচার চাই)।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আমরা এখনো নিশ্চিত নই ৷ আমি এটা বলতে চাই যে, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকতেই পারে৷ কিন্তু আমাদের তদন্তে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা কোনো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে না৷ ঘটনার ধারাবাহিকতা বিবেচনা করে দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’

আরও পড়ুন:
বুয়েটছাত্র আবরারের শরীরে আঘাতের চিহ্ন
বুয়েট ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু
বুয়েট ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
আবরারকে ডেকে তুলেছিলেন মা
আবরার হত্যায় বুয়েটের দুই শিক্ষার্থী আটক