Thank you for trying Sticky AMP!!

আলমডঙ্গায় ব্যস্ত সড়কে শিশুদের কান ধরিয়ে রাখায় মাদ্রাসাশিক্ষক আটক

শিক্ষার্থীদের কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগে মাদ্রাসাশিক্ষক মীর মিনহাজুল আবেদীনকে আটক করে পুলিশ। আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা, ১২ এপ্রিল। ছবি: শাহ আলম

পড়া না পারার অভিযোগে শহরের ব্যস্ত সড়কে শিশুশিক্ষার্থীদের কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন মাদ্রাসার এক শিক্ষক। এই ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। গত সোমবার চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় এ ঘটনা ঘটে।

আটক ওই শিক্ষকের নাম মীর মিনহাজুল আবেদীন ওরফে আফ্রিদী (২২)। তিনি আলমডাঙ্গা শহরে ‘মাদ্রাসাতুত তাকওয়া’ নামের একটি কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয় পড়াতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পড়া না পারার গত সোমবার ওই মাদ্রাসার পঞ্চম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ১০ জন শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে দাঁড় করিয়ে রাখেন ওই শিক্ষক। পরে তাদের কান ধরা অবস্থায় মাদ্রাসা থেকে বের করে হাঁটিয়ে নিয়ে আলমডাঙ্গা শহরে নিয়ে যান। সেখানেও ব্যস্ত সড়কের পাশে তাঁদের কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন তিনি। কানে ধরা অবস্থায় ১০ শিক্ষার্থী সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে আছে, এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক মিনহাজুল আবেদীনকে আটক করে পুলিশ। ওই শিক্ষার্থীরা জানায়, দুপুরের রোদের মধ্যে শহরে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরে কান ধরা অবস্থায় তাদের আবার ফিরিয়ে আনা হয় মাদ্রাসায়। মাদ্রাসায় ফিরে লজ্জায়-অপমানে সেদিন সবাই ব্যাপক কান্নাকাটি করে। তাদের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সায়েম অচেতন হয়ে পড়ে। পরে জ্ঞান ফিরলে মাদ্রাসা ছেড়ে স্থায়ীভাবে চলে যায়। এ ছাড়া আরও পাঁচজন এখনো মাদ্রাসায় ফেরেনি।

ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোহতামিম মাহাদী হাসান বলেন, মাদ্রাসাটি ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর এটাই প্রথম ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা। বৃহস্পতিবার তিনি বিষয়টা জানার পর ওই দিনই মিনহাজুলকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করেছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক মীর মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘তারা কোনো দিনও পড়া পারে না। ওই দিন রাগ চেপে রাখতে না পেরে ১০ জনকে শাস্তি দিয়ে ফেলি। পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছি।’

আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত মান্নান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই শিশুদের ছবি দেখতে পান। ছবিতে দেখেন মাদ্রাসার শিশুশিক্ষার্থীদের কান ধরে সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ঘটনাটি খুবই মর্মস্পর্শী। তিনি বলেন, এই ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মুন্সী প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে শুক্রবার দুপুর আটক করা হয়েছে। আলোচিত ঘটনার বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। তবে ঘটনার শিকার শিশুদের পরিবার থেকে কোনো মামলা বা অভিযোগ করা হয়নি।