সাভারে উচ্ছেদের এক সপ্তাহের মধ্যে আবার দখল
উচ্ছেদের এক সপ্তাহের মধ্যেই দখল হয়ে গেছে ঢাকার সাভারের গেন্ডা এলাকার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসংলগ্ন সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের জমি। এই জমিতে টিনের ঘর তুলে ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এই ব্যবসায়ীসহ খোলা আকাশের নিচে বসা ভাসমান দোকানিদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।
সওজ ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সড়ক প্রশস্তকরণসহ দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কের উভয় পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সম্প্রতি সাভারে অভিযান চালায় সওজ কর্তৃপক্ষ। এ সময় গেন্ডা এলাকায় মহাসড়কসংলগ্ন সওজের জমিতে থাকা অবৈধ বাজারের অর্ধশতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। ওই বাজার থেকে চাঁদা আদায় করতেন পৌরসভাসংলগ্ন কাঁচাবাজারের ইজারাদার জহিরুল ইসলাম। উচ্ছেদ অভিযানের পর সওজের জমি ফাঁকা পড়ে ছিল।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের পাশের সওজের জমির কিছু অংশে বিভিন্ন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে। এই ধ্বংসাবশেষের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে শতাধিক দোকান বসেছে। এক পাশে নির্মাণ করা হয়েছে লম্বা টিনের ঘর। ওই ঘরকে ছোট ছোট অংশ বানিয়ে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকার লোকজন বলেন, ১৫ দিন আগে কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি মহাসড়কের পাশে সওজের জমিতে লম্বা টিনের ঘর নির্মাণ করে। এরপর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জামানত নিয়ে ওই সব দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁরা টাকার বিনিময়ে খোলা আকাশের নিচেও ভাসমান দোকান বসানোর সুযোগ করে দিয়েছে।
সওজের জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত টিনের দোকান বরাদ্দ নিয়ে মুদি দোকান করছেন ব্যবসায়ী মজনু মিয়া। তিনি এর আগে ৯০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে অবৈধ বাজার থেকে তিনটি দোকান নিয়েছিলেন। প্রতিদিন ভাড়া দিতেন ৩ হাজার টাকা। সম্প্রতি সওজ অভিযান চালিয়ে ওই সব দোকান ভেঙে দিয়েছে। এরপর আবার জামানত দিয়ে তিনি একটি দোকান নিয়ে তাতে মুদি মালের ব্যবসা করছেন। এবার একটি দোকানের জন্য তাঁকে প্রতিদিন চাঁদা দিতে হচ্ছে ৩০০ টাকা করে।
জামানত দিয়ে সওজের জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত দোকান বরাদ্দ নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘এখানে ব্যবসা ভালো, তাই সব জেনেও দোকান বরাদ্দ নিয়ে ব্যবসা করে থাকি। আর যাঁরা ঘর বা স্থাপনা নির্মাণ করে দেন, তাঁদের চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে তাঁরা ব্যবসা করতে দেবেন না।’
খোলা আকাশের নিচের ভাসমান সবজি বিক্রেতা শাহীন বলেন, আগে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করতেন। উচ্ছেদ অভিযানের পর কিছুদিন বেকার ছিলেন। সপ্তাহখানেক আগে এককালীন ৩ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে নতুন করে দোকান বসানোর সুযোগ পেয়েছেন। এখন তাঁকে প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। লিটন ভান্ডারির নাম করে কয়েকজন তরুণ তাঁদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেন।
কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, আগে সাভার পৌরসভাসংলগ্ন কাঁচাবাজারের ইজারাদার জহিরুল ইসলামের লোকজন তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন হারে চাঁদা আদায় করতেন। এভাবে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় হতো। উচ্ছেদ অভিযানের পর আগের তুলনায় চাঁদা কম নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে সওজের কল্যাণপুর উপবিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ভূঁইয়া রেদওয়ানুর রহমান বলেন, উচ্ছেদের পর অনেক জায়গায় সওজের জমি পুনরায় দখল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া তাঁদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না। শিগগিরই আবার অভিযান চালানো হবে। তখন সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
-
ইরান-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে যে বদল এসেছে
-
আইসিইউর এসি নষ্ট, অস্ত্রোপচারও বন্ধ, কষ্টে রোগীরা
-
দিনাজপুরে ভোট গণনার পর দুই প্রার্থীর সমর্থকদের উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে নিহত ১
-
এবার ‘কিপটে’ মোস্তাফিজের ২ উইকেট, বড় জয়ে শীর্ষ তিনে ফিরল চেন্নাই
-
ঢাকাসহ ৫ জেলা: মাধ্যমিক সোমবার বন্ধ হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলাই থাকছে