Thank you for trying Sticky AMP!!

উত্ত্যক্তকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত নার্স তানজিনার মৃত্যু

তানজিনা আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় মেয়েদের উত্ত্যক্তের প্রতিবাদকারী আহত নার্স তানজিনা আক্তারের (২৪) মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) তাঁর মৃত্যু হয়। গত ২০ জুন তানজিনাকে ছুরিকাঘাত করে স্থানীয় কয়েক তরুন।

তানজিনা আক্তার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের মাদ্রাসাপাড়া এলাকার আবদুল হামিদের মেয়ে। তিনি ওই ইউনিয়নের অবস্থিত ঠাকুরগাঁও গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মূল অভিযুক্ত মো. জীবন বর্তমানে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে আছে।

মামলার এজাহার, পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির পাশে হওয়ায় তানজিনা তাঁর কর্মস্থলে হেঁটে যাতায়াত করতেন। প্রায় সময়ই তিনি পথে স্থানীয় তরুণ জীবন ও তার ৪-৫ জন সহযোগীকে বিভিন্ন মেয়েদের উত্ত্যক্ত করতে দেখে প্রতিবাদ করতেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ২০ জুন হাসপাতালে যাওয়ার পথে তানজিনাকে ছুরিকাঘাত করে জীবনেরা। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তানজিনাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই আজ তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনার দিন (২০ জুন) তানজিনার বাবা আবদুল হামিদ বাদী হয়ে জীবনসহ অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। ওই দিনই পুলিশ জীবনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান।মামলার এজাহারে জীবনের বয়স ১৯ বছর উল্লেখ করা হয়। তবে পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে জীবনের বয়স ১৪ বছর পেয়েছেন। ফলে তাকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।

তানজিনা আক্তারের চাচাতো ভাই মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘একটা সময় তানজিনা অভিযুক্ত ছেলেটিকে (জীবন) প্রাইভেট পড়াত। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ছেলেটি যখন বিভিন্ন মেয়েদের উত্ত্যক্ত করত তখন সে তার প্রতিবাদ করত। এই প্রতিবাদ করতে গিয়েই আজ তাঁকে জীবন দিতে হলো। রংপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শরীরে ২৭ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। চিকিৎসকদের অনেক চেষ্টার পর তাকে বাঁচানো গেল না। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

নিহত তানজিনার বাবা আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমার মেয়ে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আজ বখাটেদের হাতে হত্যার শিকার হলো। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আর যেন কোনো বাবাকে এভাবে সন্তান হারাতে না হয়।’ তানজিনা আক্তার তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন বলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঠাকুরগাঁও সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোতাউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমে মামলাটি হত্যাচেষ্টার ধারায় রুজু করা হয়েছিল। এখন যেহেতু নির্যাতিতা (ভিকটিম) মারা গেছেন সে ক্ষেত্রে এ মামলায় এখন হত্যার ধারা সংযুক্ত হবে। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে অভিযুক্তের বয়স ১৪ বছর পাওয়া গেছে। সে জন্য গ্রেপ্তারের পর তাকে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া মামলার আরও তদন্ত চলছে এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’