Thank you for trying Sticky AMP!!

এক ছাত্রকে তিন ছাত্রীর মারধর, সবাইকে ডেকেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ

রাজশাহী

তিন ছাত্রী মিলে এক ছাত্রকে পেটাচ্ছে—ফেসবুকে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহী নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজে গতকাল বৃহস্পতিবার। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আগামীকাল শনিবার অধ্যক্ষের কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে হবে। এটি সহপাঠীদের অভ্যন্তরীণ বা অন্য কোনো কারণেও ঘটতে পারে।

গতকাল ছিল দ্বাদশ শ্রেণির পরিসংখ্যান ও ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের নির্বাচনী পরীক্ষা। পরীক্ষার পরপরই দুপুরের দিকে মারধরের ওই ঘটনা ঘটে। পরে রাতে ওই ভিডিওটি ‘আমাদের রাজশাহী’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, কলেজ মিলনায়তনের পাশে কলেজের ইউনিফরম পরা একটি ছেলেকে ইউনিফরম না পরা এক ছাত্রী চড়থাপ্পড় দিচ্ছে। আর ছেলেটা মাথা নিচু করে মার খাচ্ছে। তার সামনে কলেজের ইউনিফরম পরা আরও দুই ছাত্রী দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের উদ্দেশে ওই ছাত্রী বলে, ‘এই, তোরাও মার। মারছিস না কেন।’ পাশ থেকে পুরুষ কণ্ঠে একজনকে শোনা যায়, ‘তোরাও মার।’ তখন ওই দুই ছাত্রীও ছেলেটাকে চড়থাপ্পড় মারতে শুরু করে। পাশ থেকে ওই ভিডিওটি ধারণ করা।

কলেজের একজন শিক্ষক জানান, যে মেয়েটি প্রথম থেকে ছেলেটিকে মারতে শুরু করে, তার নাম–পরিচয় পাওয়া গেছে। তার সঙ্গে কথাও হয়েছে। মেয়েটি দাবি করেছে, ওই ছেলেটি তাদের এক সহপাঠীকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে বাজে কথা লিখেছে। এর আগে তাকে সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও সে আবার লিখেছে। পরীক্ষার হল থেকে বের হওয়ার সময় সে তার সহপাঠীর গায়ে হাত দিয়েছে। ওই শিক্ষক আরও জানান, ওই মেয়েটির বিরুদ্ধে এ ঘটনার আগে অপর একটি মেয়েকে পেটানোর লিখিত অভিযোগ রয়েছে।

মারধরের শিকার ছেলেটির সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর বাবার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছে। তাঁর বাবা বলেন, তিনি ঘটনার কিছুই জানেন না। কলেজের অধ্যক্ষ তাঁকে ফোন দিয়ে ছেলেকে নিয়ে শনিবার বেলা ১১টায় যেতে বলেছেন। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনে তিনি বলেন, তাঁর ছেলে খুবই নরম প্রকৃতির। তিনি বুঝতে পারছেন না, তার ছেলের পক্ষে এটা করা সম্ভব কি না।

নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জার্জিস কাদির প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল বেলা ১১টায় সবাইকে ডাকা হয়েছে। তাঁরা সবার সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলবেন। তিনি বলেন, তাঁদের কলেজের যৌন নির্যাতনবিরোধী কমিটি রয়েছে। অভিযোগ বাক্স রয়েছে। যে মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, সেই মেয়েটি কলেজ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ওই মেয়েটিকে কেন জানাতে গেল, এটা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। পাশ থেকে অন্য ছেলেরাও মারতে বলেছে। সেই সঙ্গে ভিডিও করেছে। সহপাঠীদের মধ্যে অনেক ব্যাপার থাকে। ছেলেটাকে ফাঁসানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে এটা করা হয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। এদিকে যে মেয়েটি প্রথমে মারতে শুরু করে, তার বিরুদ্ধে কলেজের আরও একটি মেয়েকে মারার অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন। সবার সঙ্গে বসলে বিষয়টি তাঁরা নিশ্চিত হতে পারবেন।