Thank you for trying Sticky AMP!!

এমন নির্যাতন করে কেউ!

বেদম পিটুনিতে দশম শ্রেণির ছাত্র মো. সাকিব হাসানের (১৬) শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে গিয়েছিল। নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল ডান চোখ। এরপর পেটে ছুরি চালানো হয়। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছিল সে। নরসিংদীর শিবপুরে এই নির্যাতনের ঘটনা প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস আগের—৩ সেপ্টেম্বর, ঈদুল আজহার পরদিন।

সম্প্রতি স্মৃতি ফিরে পেয়ে পরিবারকে সব ঘটনা জানায় সাকিব। এরপর শুক্রবার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। গতকাল শনিবার দুপুরে জেলার
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মুরাদ জাহান চৌধুরীর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে নির্যাতনের বর্ণনা দেয় সাকিব। সে উপজেলার বাজনাব গ্রামের মো. সবুজ সরকারের ছেলে এবং শিবপুর পাইলট মডেল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র।

শিবপুর থানায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাকিবের আবদারে পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেওয়া হয়। স্থানীয় কয়েক যুবক সেটি চালানোর আবদার করলে সাকিব দেয়নি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ওই মোটরসাইকেলসহ আরও কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে কয়েক যুবক সাকিবকে ইটাখোলায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে নেশা জাতীয় কিছু খাওয়ানো হয়। এরপর ভৈরবের কাছাকাছি মাহমুদাবাদ সেতুর কাছে নিয়ে ওই যুবকেরা পিটিয়ে সাকিবের বাম পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেয়। একটি চোখ নষ্ট করে দেওয়া হয়। ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করা হয়। এরপর তাকে সেতু থেকে নিচে ফেলে দেয়। স্থানীয় লোকজন সেতু থেকে কিছু পড়ার শব্দ পেয়ে সাকিবকে উদ্ধার করে ভৈরবের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরিবারের লোকজন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন শিবপুরের পশ্চিম পাড়ার মো. রবিন মিয়া, বাজনাব গ্রামের মো. বিল্লাল হোসেন, বাবু মিয়া, শাকিল মিয়া, আরিফ হোসেন, মাহফুজ মিয়া ও বেলায়েত হোসেন।

সাকিবের মা পারভীন আক্তার বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় মাস চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সাকিবের জ্ঞান ফেরে। জ্ঞান ফেরার পর সে আমাদের জানায় কে কে তাকে এইভাবে মেরেছিল। এরপর আমি মামলা করি। আমাকে এখন অনেকেই হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমাদের এই গ্রাম থেকে উঠিয়ে দেবে বলছে। কিন্তু আমার ছেলের ওপর এই নির্মম নির্যাতনের শাস্তি চাই আমি।’

শিবপুর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আফতাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এই মামলার দ্বিতীয় আসামি মো. বিল্লাল হোসেনকে আমরা শিবপুরের ইটাখোলা থেকে গ্রেপ্তার করেছি। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।