Thank you for trying Sticky AMP!!

কক্সবাজারে দুই 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ৩

বন্দুকযুদ্ধ। প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফ ও মহেশখালী উপজেলায় পৃথক দুই কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত হয়েছেন। টেকনাফে র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুজন সন্দেহভাজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। আর মহেশখালীতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তি ‘শীর্ষ ডাকাত’ বলে দাবি করেছে পুলিশ।

টেকনাফ:

টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি ঘটে গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়ার মেরিন ড্রাইভ এলাকায়।

ওই ঘটনায় নিহত দুই ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানাতে না পারলেও র‍্যাব বলছে, তাঁরা ইয়াবা ব্যবসায়ী। র‍্যাবের ভাষ্য, ঘটনাস্থল থেকে ৫০ হাজার ইয়াবা বড়ি, দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ানশ্যুটার গান ও ১৪টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

র‍্যাব-৭-এর টেকনাফ ক্যাম্পের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট (বিএন) মির্জা মাহতাব প্রথম আলোকে বলেন, বাহারছড়া এলাকা দিয়ে গতকাল রাতে ইয়াবার বড় একটি চালান খালাস হতে পারে বলে গোপন তথ্য আসে। এই তথ্য পেয়ে র‍্যাব ওই এলাকায় নজরদারি বাড়ায়। দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। র‍্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর ইয়াবা কারবারিরা পিছু হটে। পরে ঘটনাস্থলে দুই ইয়াবা কারবারিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁদের উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, নিহত দুই ব্যক্তির নাম-পরিচয় আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মহেশখালী:
মহেশখালী থানা-পুলিশ বলেছে, উপজেলার গোরকঘাটা- শাপলাপুর সড়কের কালামারদিয়া ঢালাই পুলিশের সঙ্গে ডাকাত দলের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টায়। এতে হেলাল উদ্দিন (৩০) নামের এক শীর্ষ ডাকাত নিহত হন। এ সময় ডাকাতের ছোড়া ছররা গুলিতে টুটুল বড়ুয়া (২৩) নামের এক পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইটি অস্ত্র, ১৬ রাউন্ড গুলি ও ১১ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করে। হেলাল উদ্দিন উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের হংশ মিয়াজিরপাড়ার বাসিন্দা।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, নিহত হেলাল থানার তালিকাভুক্ত শীর্ষ ডাকাত। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্রসহ ১৪টি মামলা রয়েছে।

পুলিশের ভাষ্য, গতকাল সকালে শীর্ষ ডাকাত হেলাল উদ্দিন তাঁর লোকজন নিয়ে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণকাজে বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পসকো ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেডে কর্মরত ছয় কর্মকর্তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তারা অপহৃত ছয়জনের মধ্যে চারজনকে একটি বসতবাড়িতে আটকিয়ে তাঁদের হাতে অস্ত্র দিয়ে ছবি তোলার পর ১০ মিনিটের মধ্যে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনা জানার পর ডাকাতদের ধরার জন্য পুলিশ বিশেষ অভিযানে নামে। প্রথমে বিকেল তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ হাশেম ও তাঁর ছেলে শেখ মোহাম্মদ বদর এবং মোহাম্মদ আলী নামের সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে। পরে শীর্ষ ডাকাত হেলাল উদ্দিনকে ধরার জন্য পুলিশ মাতারবাড়ী ইউনিয়নের চারপাশে ঘিরে রাখে।

পুলিশ জানায়, হেলালকে ধরার জন্য গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাইরার ডেইল এলাকায় পুলিশ অভিযান চালান। এ সময় পুলিশের উপস্থিতির টের পেয়ে হেলাল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন পুলিশ কনস্টেবল টুটুল বড়ুয়া। পরে পুলিশ সদস্যরা ধাওয়া করে একটি পাইপ গান ও সাত রাউন্ড গুলিসহ হেলালকে গ্রেপ্তার করে।

রাত সাড়ে ১২টার দিকে হেলালকে নিয়ে মহেশখালী থানায় আসার পথে কালারমিয়ার ঢালাই এলাকায় পৌঁছালে তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে দলের অন্য সদস্যরা পাহাড়ি এলাকা থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এখানে পুলিশ ও ডাকাতদের মধ্যে আধা ঘণ্টা ধরে বন্দুকযুদ্ধ হয়। এ সময় পুলিশের কাছ থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদলের সদস্যদের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন হেলাল উদ্দিন।

গুরুতর আহত অবস্থায় হেলাল উদ্দিন ও পুলিশ সদস্য টুটুল বড়ুয়াকে রাত আড়াইটার দিকে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক হেলাল উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অপর পুলিশ সদস্য টুটুল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় আত্মরক্ষার্থে পুলিশের পক্ষ থেকে ২৬ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে।