কক্সবাজারে মাদকের বিরুদ্ধে র্যাবের 'নতুন যুদ্ধ' শুরু
কক্সবাজারে র্যাবের আরও পাঁচটি ক্যাম্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় শহরের লিংক রোড এলাকা থেকে সাইরেন বাজিয়ে ২৪টি দলের বিশেষ যৌথ টহল শুরুর মাধ্যমে মাদকবিরোধী ‘নতুন যুদ্ধের’ ঘোষণা জানান দেয় র্যাব।
র্যাবের টহল দলটি শহরের কলাতলী হয়ে প্রথমে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর আবার কলাতলীর ডলফিন চত্বর হয়ে রামু, উখিয়া অতিক্রম করে সন্ধ্যায় টেকনাফ পৌরসভার ঝরনা চত্বরে পৌঁছায়।
আগামী ২ আগস্ট নতুন ক্যাম্পগুলো পরিদর্শনে আসার কথা রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও র্যাবের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের।
বেলা তিনটার দিকে যৌথ টহল দলটি পৌঁছায় মেরিন ড্রাইভ সড়কের দরিয়ানগর এলাকায়। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন র্যাব-৭ কক্সবাজার সিপিসি-২-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী র্যাবের “চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে” শীর্ষক অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। কক্সবাজারকে মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে টেকনাফে নতুন করে র্যাবের পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। আজ আনুষ্ঠানিক টহলের মাধ্যমে ক্যাম্পগুলোর যাত্রা শুরু হলো। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধ ঘোষণার কথা জনগণকে জানিয়ে দিলাম। ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ীদের আর রক্ষা নেই।’
র্যাব সূত্র জানায়, উখিয়া ও টেকনাফের ওপারে মিয়ানমার। মিয়ানমারের কারখানায় তৈরি ইয়াবা টেকনাফ-উখিয়া সীমান্ত দিয়েই দেশে ঢোকে। সীমান্তে পাহারার জন্য বিজিবি ও নৌপথ পাহারার জন্য কোস্টগার্ড রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে পুলিশ। এরপরও ইয়াবা পাচার বন্ধ হয়নি। তাই ইয়াবা বন্ধে এই নতুন পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
নতুন পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ সদর, বাহারছড়া ও হোয়াইক্যং এলাকায়। এর আগে কক্সবাজার ও টেকনাফে আরও দুটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়।
আজ র্যাবের যৌথ টহল দলটি কক্সবাজার শহর, মেরিন ড্রাইভ ও টেকনাফ পৌরসভা প্রদক্ষিণের সময় শত শত মানুষ হাত উঁচিয়ে তাদের অভিনন্দন জানান এবং চিৎকার করে তাঁরা বলতে থাকেন, ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’।
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইয়াবা তালিকায় ইয়াবার উৎসভূমি টেকনাফের ৯০০ এবং উখিয়ায় ২০০ জন ইয়াবা কারবারি রয়েছেন। বিশেষ অভিযানে ইয়াবাসহ পাচারকারীরা গ্রেপ্তার হলেও চিহ্নিত গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন। গডফাদারদের আইনের আওতায় না আনলে অভিযান সফল হবে না।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কক্সবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযান এলাকার মানুষ সানন্দে গ্রহণ করলেও চিহ্নিত গডফাদাররা এলাকায় অবস্থান করেন। এ কারণে ইয়াবা চোরাচালান বন্ধ হয় না।