Thank you for trying Sticky AMP!!

কটু কথায় জীবন অতিষ্ঠ আয়শার

বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যার বিচার ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মানববন্ধন। গতকাল বরিশাল নগরের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে। ছবি: প্রথম আলো

বরগুনায় রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার মূল আসামিরা এখনো ধরা পড়েননি। এর মধ্যেই একটি মহল আলোচনা শুরু করেছে রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকাকে নিয়ে। আয়শার পরিবার বলছে, নিজের চোখে দেখা ভয়ংকর ঘটনা আর স্বামীর শোক সামলে উঠতে পারেননি আয়শা। তার ওপর লোকজনের কটু কথা তাঁর জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।

গতকাল রোববার সকালে বরগুনা শহরের মধ্য মাইঠা এলাকায় আয়শার বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, চার পুলিশ সদস্য অস্থায়ী চৌকি বানিয়ে সেখানে পাহারা রয়েছেন। নীরবে বসে আছেন আয়শার বাবা মোজাম্মেল হোসেন। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তিনি বলেন, ‘মাত্র দুই মাস আগে ধুমধাম করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম। কী নির্মম নিয়তি! দুই মাস না যেতেই আমার মেয়েটা...!’ আর কথা বলতে পারেননি মোজাম্মেল। একটু পর বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে খাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছে মেয়েটা। ঘুমের মধ্যেও আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠে। প্রচণ্ড দুর্বলতার কারণে চিকিৎসক স্যালাইন দিতে বলেছেন। এখন আবার অনেকে তাকেই দোষারোপ করছে।’

আয়শার সঙ্গে কথা বলতে এই প্রতিবেদককে ঘরে নিয়ে যান মোজাম্মেল। ঘরে যেতেই আয়শার আহাজারি, ‘আমার আর কী বাকি রইল? সবকিছুই তো শেষ!’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই যে তাঁকে দুষছেন, বিষয়টি জানেন আয়শা। হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডের সঙ্গে তাঁর বিয়ে নিয়েও রয়েছে নানা কথা। এ বিষয়ে আয়শা বলেন, সন্ত্রাসী নয়ন তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করছিলেন। প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আয়শা রাজি ছিলেন না। বছর দেড়েক আগে কলেজে আসার পথে নয়ন ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে অস্ত্রের মুখে একটি বাড়িতে নিয়ে জোর করে সই নেন। এরপর থেকেই নয়ন তাঁকে স্ত্রী দাবি করা শুরু করেন। আয়শা প্রতিবাদ করলে তাঁর স্কুলপড়ুয়া ছোট বোনসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেন।

>

মূল আসামিরা এখনো ধরা পড়েননি
অপেক্ষা করতে বললেন পুলিশ সুপার

আয়শার পরিবার বলছে, তাঁকে যেভাবে জোর করে তুলে নিয়ে একটি কাবিননামায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছিল, সেটাকে বিয়ে বলা যায় না। কাবিননামা অনুযায়ী এই বিয়ের কাজি হলেন আনিসুর রহমান ভূঁইয়া। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর কার্যালয়েই আয়শা ও নয়নের বিয়ে নিবন্ধন হয়েছিল। ছেলেপক্ষে ২০-২৫ জন তরুণ উপস্থিত থাকলেও মেয়ের পক্ষে কেউ ছিলেন না।

মেয়ের অভিভাবক ছাড়া কী করে বিয়ে নিবন্ধন হলো, জানতে চাইলে কাজি আনিসুর রহমান বলেন, তিনি প্রসঙ্গটি তুললে নয়নের পক্ষের কেউ একজন ফোনে আয়শার মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। তবে কাজি যে আয়শার মায়ের সঙ্গেই কথা বলেছেন, তা তিনি যাচাই করেননি।

মূল আসামিদের বিষয়ে পুলিশ
পুলিশের ব্যাপক তৎপরতার পরও কেন মূল আসামিরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন না, জানতে চাইলে বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি সেকেন্ড-ঘণ্টা মেপে বলার বিষয় নয়। এখানে কৌশলগত অনেক বিষয় রয়েছে। এর মানে এটা নয় যে আমরা আসামি ধরছি না, আমাদের গাফিলতি আছে কিংবা আসামিরা আমাদের নজরদারির বাইরে চলে গেছে। আপনারা অপেক্ষা করেন, আশা করছি ভালো কিছু দিতে পারব।’