কপোতাক্ষ নদে খননযন্ত্র বসিয়ে পাড় ভরাট
ঝিনাইদহের মহেশপুরে কপোতাক্ষ নদে খনন যন্ত্র দিয়ে বালু তুলে ফেলা হচ্ছে নদের পাড়ে। মহেশপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ এলাকায় নদের পাড় ভরাট করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেখানে গড়ে তোলা হবে স্থাপনা।
কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, যে স্থানটি তারা ভরাট করছে সেটা নদের জায়গা নয়, জায়গাটি কলেজের। ঠিকাদারের মাধ্যমে ওই জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। ঠিকাদার কোথা থেকে বালু তুলছেন সেটা তাঁর নিজস্ব বিষয়। সেটি দেখার বিষয় কলেজের নয়।
এদিকে একই স্থানে নদটির দক্ষিণ পাড়ে ফেলা হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সেখানে মাছ বাজার প্রতিষ্ঠার জন্য ময়লা ফেলে ভরাট করছে। পৌর এলাকার প্রতিদিনের বর্জ্য এই নদে ফেলা হচ্ছে। ময়লা ফেলে ইতিমধ্যে বেশ কিছু জায়গা ভরাট করা হয়েছে। এ নিয়ে একাধিকবার গণমাধ্যম খবর প্রকাশিত হলেও বর্জ্য ফেলা বন্ধ করেনি পৌর কর্তৃপক্ষ।
যশোর জেলার ওপর দিয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদটির কিছু অংশ ঝিনাইদহের মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। নদটি মহেশপুর উপজেলার পুরন্দপুর এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খালিশপুর বাজার হয়ে মহেশপুর শহরে প্রবেশ করেছে। মহেশপুর শহর পেরিয়ে বৈচিতলা হয়ে আবারও শহরের আরেক পাশ দিয়ে বয়ে আজমপুর হয়ে কোটচাঁদপুরে প্রবেশ করেছে। সেখান থেকে চৌগাছা হয়ে যশোরের কেশবপুরে প্রবেশ করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কপোতাক্ষ নদের মহেশপুর শহর অংশে বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। নদের উত্তরে মহেশপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ আর দক্ষিণে মহেশপুর পৌরসভা ভবন রয়েছে। এ ছাড়া ওই স্থানেই রয়েছে একটি সেতু। যে সেতুর দুই পাশে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এই মহেশপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সামনে দিয়ে যুগিহুদা গ্রামের মধ্যে একটি ইটের রাস্তা নেমে গেছে। সেই রাস্তাটির উত্তরে কলেজের খেলার মাঠ ও কলেজ ভবন অবস্থিত। আর ওই ইটের রাস্তার দক্ষিণে কপোতাক্ষ নদ। সেখানে নদের পাড় ভরাট করা হচ্ছে। আর এই ভরাট কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে খননযন্ত্র। যন্ত্রটি নদের মাঝখানে বসানো হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে খননযন্ত্র দিয়ে বালি তোলা হচ্ছে। এই বালি পাইপের মাধ্যমে ফেলা হচ্ছে পাড়ে। পাড় ভরাট করার কারণে নদের জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়ছে। বেশ কয়েক বছর হলো এই নদের পাড়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এখন মসজিদের পাশে আরও জায়গা ভরাট করা হচ্ছে।
আমিনুর রহমান নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষসহ এলাকার অনেকে নদের জায়গা দখল করছেন। বর্জ্য ফেলে নদ ভরাট করছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষও। কলেজ কর্তৃপক্ষ নদের জায়গায় স্থাপনা করবে, আর পৌরসভা করবে মাছ বাজার। নদ থাকল কি থাকল না তা নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।
মহেশপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহ বলেন, যে জায়গাটি ভরাট করা হচ্ছে সেটা কলেজের জায়গা। কলেজের প্রয়োজনে ভরাট চলছে। ভরাটের দায়িত্বে রয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নিয়োগ করা এক ঠিকাদার। ঠিকাদার কোথা থেকে মাটি বা বালু নিয়ে এসে ভরাট করছেন তা তার বিষয়।
এলজিইডির উপজেলা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার শহিদুল ইসলাম নামের এক ঠিকাদারের হয়ে কাজটি করছেন মহেশপুর শহরের যুগিহুদা এলাকার মিলন হোসেন। তবে মিলন হোসেন নদের ভেতর থেকে বালি ওঠানোর কথা অস্বীকার করেন। আর ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম জানান, তার লাইসেন্স ব্যবহার করে মহেশপুরের কেউ এই কাজটি করছেন। তিনি কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেছেন মাত্র। এর বেশি কিছু বলতে পারেন না।
মহেশপুরের ইউএনও শাশ্বতী শীল বলেন, তিনি বালি ওঠানো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরও বালি ওঠালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
-
সফর বন্ধের ঘোষণা দিয়ে সাড়ে তিন মাসেই বিদেশ গেলেন প্রতিমন্ত্রীসহ ২৩ জন
-
কালও বন্ধ থাকবে যেসব জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
-
প্রশ্নপত্র ফাঁস: ঢাবির ৮৭ শিক্ষার্থীসহ সব আসামি খালাস, রায়ে যা বলেছেন আদালত
-
প্রধানমন্ত্রী স্বজন বলতে স্ত্রী-সন্তানকে বুঝিয়েছেন, ওবায়দুল কাদের
-
কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক