Thank you for trying Sticky AMP!!

কিশোরী ধর্ষণ ও আত্মহত্যার মামলায় দুই আসামির জবানবন্দি

নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনায় কিশোরী পান্না আক্তারকে (১৪) ধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে তাঁদের বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়। 

গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন কৌশিক সরকার ওরফে অপু (২৩) এবং মামুন মিয়া আকন্দ (২৬)। কৌশিক প্রধান আসামি। তিনি জেলা ছাত্রলীগের কৃষিবিষয়ক উপসম্পাদক। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁকে শহরের নাগড়া মাইক্রোস্টেশন এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামুন ঠাকুরাকোনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক এক চেয়ারম্যানের ভাগনে। গত সোমবার গভীর রাতে দুর্গাপুরের বিরিশিরি থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন। মামলার অপর আসামি সুলতান মিয়া (২২) তাঁদের সহযোগী। তাঁকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
পান্নার পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় নেত্রকোনা মডেল থানার পুলিশ প্রথমে মামলা নেয়নি। এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে শেষে পান্নার মায়ের মামলা নিতে বাধ্য হয়। মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
ওই কিশোরীর মা বলেন, ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে তিন তরুণ তাঁর মেয়েকে মাছের খামারে একটি ঘরে ডেকে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি কৌশলে মেয়েকে উদ্ধার করে ঘরে এনে জানতে পারেন, ওই তিন তরুণ মেয়েকে ধর্ষণ করেছেন। কিছুক্ষণ পর তরুণদের মধ্যে মামুন এসে ঘটনাটি কাউকে জানালে তাঁদের মেরে ফেলার হুমকি দেন। কিন্তু এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। পরদিন বেলা ১১টার পর পাশের ঘরের আড়ার সঙ্গে মেয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখেন স্থানীয় লোকজন।
কিশোরীর রিকশাচালক বাবা মামলা করতে গেলে পুলিশ তাঁর মামলা না নিয়ে বলে, অপমৃত্যুর মামলা চলবে। আর নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমীর তৈমুর ইলী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মেয়েটি গলায় দড়ি দিয়ে মারা গেছে। কোনো রেপটেপ হয়নি।’ এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। গত রোববার রাতে নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরীর নির্দেশে পুলিশ মামলা নেয়। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে অপমৃত্যু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোস্তাক আহম্মদকে সরিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয় মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ-এ নুর আলমকে। সদর সার্কেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশসহ পুলিশের একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে দুই আসামিকে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ-এ নুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, আজ বিকেলে প্রধান আসামি কৌশিক সরকারকে বিচারিক হাকিম সৈয়দ আবদুল্লাহ আল হাবিবের আদালতে এবং মামুন মিয়াকে জুলফিকার আলী রনির আদালতে হাজির করা হয়। আদালত আসামিদের ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে গত সোমবার পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কবর থেকে তোলার আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করে আজ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আদেশের কপি পাঠান।