Thank you for trying Sticky AMP!!

কুলাউড়ায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ, শাশুড়ি, দেবরসহ গ্রেপ্তার ৪

প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পারিবারিক কলহের জের ধরে মাজেদা বেগম (২১) নামের সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত মাজেদা উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাবই গ্রামের আবদুল মুকিতের স্ত্রী। এ ব্যাপারে গতকাল শুক্রবার রাতে কুলাউড়া থানায় মামলা হয়েছে। নিহত গৃহবধূর শাশুড়ি, দেবরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহার, পুলিশ ও নিহত গৃহবধূর স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, মাজেদার বাবার বাড়ি একই উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্তগ্রামে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর বিয়ে হয়। স্বামী মুকিত সিলেট নগরে একটি রেস্তোরাঁয় বাবুর্চির কাজ করেন। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন মাজেদাকে বিভিন্নভাবে চাপ দেন। মাজেদার বাবা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী। এ ছাড়া পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। এ অবস্থায় যৌতুক দেওয়া সম্ভব নয় বলে মাজেদা জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রায়ই তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন।

সূত্র আরও জানায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাজেদা হঠাৎ করে মারা গেছেন। তড়িঘড়ি করে তাঁরা লাশ দাফনের চেষ্টাও চালানো হয়। এতে স্বজনদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি তাঁরা পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাজেদার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার জেলা সদরে অবস্থিত ২৫০ শয্যার হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাজেদার শাশুড়ি আফিয়া বেগম (৫০), দেবর মোস্তাক আহমদ (২০), জায়েদ আহমদ (২৩) ও আত্মীয় আবদুল জলিলকে (৩২) আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল রাত আটটার দিকে নিহত মাজেদার মা কবিরুন্নেছা বাদী হয়ে আটক চারজনসহ মাজেদার ভাশুর মুক্তার মিয়া (২৮), স্বামী মুকিত ও দুই ননদকে আসামি করে মামলা করেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন শ্বাসরোধে মাজেদা হত্যা করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে থাকা কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কানাই লাল চক্রবর্তী আজ শনিবার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, নিহত মাজেদার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তথ্য উদ্‌ঘাটনের জন্য আটক চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হবে। অপর আসামিরা পলাতক। তবে তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে নিহত মাজেদার স্বামী মুকিতের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।