Thank you for trying Sticky AMP!!

গাজীপুরে জাপা নেতার রিসোর্টে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

নারগানা রিসোর্টের বাঁশের তৈরি একটি বিশেষ কামরায় আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। ছবি: প্রথম আলো

জাতীয় পার্টির প্রেসেডিয়াম সদস্য আজম খানের মালিকানাধীন একটি রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার রাত ৯টায় গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নারগানা গ্রামের নারগানা ইন্টারন্যাশনাল নামের রিসোর্টে এ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে রিসোর্টের একটি ঘর পুড়ে যায়। ভেঙে তছনছ করে ফেলা হয় বিভিন্ন আসবাব ও অন্যান্য জিনিসপত্র। নষ্ট করা হয় কয়েক হাজার গাছ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রিসোর্টটি প্রায় ৮০ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এর ভেতরে হাঁস, মুরগি, গরু পালনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও নার্সারি করা হয়েছে। দর্শনার্থীরাও এখানে আসেন অবসর যাপনে। এখানে আজম খানের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের। ১১ বছর আগেও একইভাব রিসোর্টটিতে হামলা হয়। এরপর গত রোববার পুনরায় এ ঘটনা ঘটে।

আজম খানের অভিযোগ, তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এ হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা–কর্মী। হামলার ঘটনা জেনে কোনোভাবে নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছেন।

পুরো রিসোর্টের বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। ছবি: প্রথম আলো

রিসোর্টটির ব্যবস্থাপক, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিদিনের মতো রোববারও সারা দিন রিসোর্টটিতে বিভিন্ন লোকজন ছিল। সবাই চলে গেলে রাত ৯টার দিকে হঠাৎ করেই ১৫ থেকে ২০টি মোটরসাইকেলে করে লোকজন আসেন। এরপর রিসোর্টটির মুল ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশে করেই শুরু করেন ভাঙচুর। প্রথমে রিসোর্টের ভেতরে থাকা বিশ্রামগারে প্রবেশে করে বিভিন্ন আসবাব ভাঙচুর করেন। পরে আশপাশের ঘর ও অন্যান্য জায়গায় থাকা জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। এরই একপর্যায়ে বাঁশের তৈরি একটি বিশেষ কামরায় আগুন ধরিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গাছপালা ও চারাগাছ নষ্ট করে ফেলেন।

ব্যাপস্থাপক মো. সোহেল খন্দকার বলেন, ‘হামলাকারীরা ভেতরে ঢুকেই আমাকে আঘাত করে। পরে আমি সরে গেলে সবকিছু ভেঙে তছনছ করে ফেলে।’ তাঁর দাবি, হামলায় অংশ নেন  ৮০ জনের বেশি। এতে ১০ হাজারের বেশি চারাগাছ নষ্ট করাসহ বিভিন্ন জিনিস, আসবাব ভাঙচুর করে। হামলায় তাঁদের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

রিসোর্টের কয়েক হাজার গাছের চারা নষ্ট করে হামলাকারীরা। ছবি: প্রথম আলো

আজ সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, রিসোর্টটির ভেতর ভাঙচুর হওয়া আসবাব, অন্যান্য জিনিসপত্র পড়ে আছে এলোমেলো। এর মধ্যে বাঁশের তৈরি বিশেষ কামরাটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তা ছাড়া রিসোর্টের বিভিন্ন ঘরে থাকা ফ্রিজ, টিভি, এয়ারকুলার, আলমারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এর মধ্যে কোনোটি পুরোপুরি ভাঙা আবার কোনোটি বা অর্ধভাঙা।

আজম খান বলেন, ‘হামলাকারীদের মূল উদ্দেশ্য ছিল আমাকে হত্যা করা। কিন্তু আমি আগেই কোনোভাবে খবর পেয়ে সরে যাই।’ তিনি বলেন, ‘এই হামলার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা। তারাই পরিকল্পিতভাবে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। এর আগেও একইভাবে রিসোর্টটিতে হামলা চালানো হয়। এ ব্যাপারে পুলিশও কোনো ভূমিকা নেয়নি।’

জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুল হক বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।