Thank you for trying Sticky AMP!!

গাজীপুরে রাস্তার ওপর লেগুনার স্ট্যান্ড

ব্যস্ত সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে আছে লেগুনা, টেম্পো। মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের মীরের বাজার থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরের পুবাইল মীরের বাজারের পূর্ব দিকে টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক মহাসড়ক, দক্ষিণে ভোগড়া মোড়-কাঞ্চন ব্রিজ সড়ক। সড়ক দুটিতে প্রতিদিনই চলছে অসংখ্য ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, যাত্রীবাহী বাস ও দূরপাল্লার অন্যান্য যানবাহন। কিন্তু টঙ্গী-ঘোড়াশাল সড়কের মীরের বাজার এলাকায় সড়কের ওপর গড়ে উঠেছে লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড। এতে যান চলাচলে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কে মীরের বাজারের শুরুতেই রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা, টেম্পো ও লেগুনা। চালকদের কেউ যাত্রী তুলছেন, কেউ যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। গাড়িগুলো সড়কের ওপর থাকায় যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। মাঝেমধ্যেই লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ যানজট।

চালকেরা জানান, ২০-২৫টি লেগুনা, ১০-১৫টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ৪০-৫০টি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল করে এখান থেকে। যানবাহনগুলো হারবাইদ, মাঝুখান, টঙ্গী স্টেশন রোড, কালীগঞ্জ, পুবাইলে চলাচল করে। প্রতিটি যান থেকেই আলাদাভাবে চাঁদা তোলা হয়। এ ছাড়া মাস শেষে তাঁদের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট হারে টাকা (জিপি) নেওয়া হয়।

একইভাবে ভোগড়া মোড়-কাঞ্চন ব্রিজ সড়কের পুবাইল সেন্ট্রাল ল কলেজের সামনে থেকে ট্রাস্ট ব্যাংক পর্যন্ত রাস্তার এক পাশে লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যানবাহনগুলো হুটহাট সড়কের ওপর উঠে পড়ছিল। যত্রতত্র গাড়ি ঘোরাতে গিয়ে প্রায় সময়ই সৃষ্টি হচ্ছিল দীর্ঘ যানজটের। এখানেও প্রতিটি যানবাহন থেকে দৈনিক চাঁদা নেওয়া হয়। প্রকারভেদে চাঁদার পরিমাণ ভিন্ন। যানবাহনগুলো চলাচল করে জয়দেবপুর, ঝাজর, বাইপাসসহ বিভিন্ন এলাকায়।

চালকেরা জানান, দৈনিক চাঁদার ভিত্তিতে যানগুলো পার্ক করতে দেওয়া হয় সেখানে। লেগুনাপ্রতি ৩০ টাকা, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ২০ টাকা এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা থেকে কখনো ২০, আবার কখনো ৩০ টাকা নেওয়া হয়। এ ছাড়া মাস শেষে জিপি দিতে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যানগুলো থেকে চাঁদা তোলার কাজ করেন ৮-১০ জন লাইনম্যান। তাঁরা নির্দিষ্ট বেতনে এ কাজ করেন। কথা হলে মো. ইউসুফ নামের একজন লাইনম্যান বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে টাকা তোলা। এটা আমাদের চাকরি।’ কিন্তু কেন টাকা নেওয়া হয় জানতে চাইলে তিনি মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তবে আরেকজন লাইনম্যান বলেন, ‘আমরা যে শুধু টাকা তুলি তা নয়, যানবাহনগুলো ঠিকঠাকমতো চলাচল করছে কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখি।’

এদিকে টঙ্গী থেকে ঘোড়াশাল, কালীগঞ্জ ও সিলেটগামী যানবাহনগুলোকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় মীরের বাজারের যানজট পার হওয়ার জন্য। নরসিংদীগামী উত্তরা পরিবহনের চালক মো. ফারুক হোসেন বলেন, টঙ্গী থেকে মাঝুখান পর্যন্ত এক টানে আসা যায়। এরপর থেকে থেমে থেমে যানজট শুরু হয়। কখনো মীরের বাজার পার হতেই আধঘণ্টার বেশি সময় লেগে যায়। কথা হলে কয়েকজন বাসযাত্রী জানান, ট্রাফিক পুলিশের সামনেই যানবাহনগুলো সড়ক দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। তারপরও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেন না। ঘোড়াশালগামী বাসের যাত্রী রোজিনা আক্তার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আগে রাস্তা ভাঙা থাকার কারণে যাতায়াতে সময় বেশি লাগত। আর এখন যানজটের কারণে সময় বেশি লাগে।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে গাজীপুর জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাস্তার ওপর অবৈধ স্ট্যান্ড করে চাঁদা তোলার কোনো নিয়ম নাই। এ বিষয়ে আমরা তাদের কোনো ধরনের অনুমতি দিইনি। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি, দক্ষিণ) থোয়াইঅংপ্রু মারমা বলেন, ‘টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় যানবাহন থেকে চাঁদা তোলে, এমন কিছু চক্রের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যদি মীরের বাজারেও এই ধরনের চক্র থাকে, তবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’