Thank you for trying Sticky AMP!!

গায়ে আগুন দেওয়ার আগে যা বলেছেন তরুণী

প্রতীকী ছবি

অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা গেছেন এক তরুণী। আজ সোমবার বেলা ১১টায় শাহীন নামের ওই তরুণী মারা যান। গতকাল রোববার লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর ফলকন গ্রামে একটি সয়াবিনখেতের ভেতর থেকে গায়ে আগুন লাগা অবস্থায় দৌড়ে বের হয়ে এলে শাহীনকে উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। তাঁকে প্রথমে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তিনি মারা যান।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার সোনাগাজী গ্রামের জাফরউদ্দিনের মেয়ে শাহীন। গত শনিবার চর ফলকন গ্রামের রিকশাচালক সালাউদ্দিনের বাড়িতে এসে স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করেন শাহীন। তিনি দাবি করেন, সালাউদ্দিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছে। এই সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন সালাউদ্দিন। পরে এ নিয়ে সালিস বৈঠক হয়। কোনো মীমাংসা না হওয়ায় গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে শাহীন নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা।

এ ঘটনার পর সালাউদ্দিন তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সালাউদ্দিনের দুই ভাই আলাউদ্দিন, আবদুর রহমানসহ চর ফলকন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাফিজউদ্দিন ও গ্রাম পুলিশ সদস্য আবু তাহেরকে আটক করা হয়েছে।

চর ফলকনে গ্রামের চায়ের দোকানি আবুল খায়ের প্রথম আলোকে বলেন, গ্রামে ঢুকে প্রথমে তাঁর দোকানেই বসেন শাহীন। শোনান তাঁর জীবনের গল্প। শাহীনের দেওয়া তথ্যের বরাতে আবুল খায়ের বলেন, মুঠোফোনে সালাউদ্দিনের সঙ্গে পরিচয় হয় শাহীনের। পরিচয় থেকে প্রেম। পরে চট্টগ্রামে গিয়ে শাহীনকে বিয়ে করেন সালাউদ্দিন। তবে বিয়ের সময়, তারিখ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেননি শাহীন। স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করলে সালাউদ্দিন তা অস্বীকার করেছে বলে জানান শাহীন।

এ ঘটনা জানতে পেরে গত শনিবার বিকেলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হাফিজউদ্দিন সালিস বৈঠক করেন। বৈঠকেও শাহীনকে বিয়ের কথা অস্বীকার করেন সালাউদ্দিন। এ সময় শাহীনের কাছে বিয়ের কাবিননামা চাওয়া হয়। কাবিননামা দেখাতে না পারায় তাঁকে সেগুলো আনতে বলা হয়। এরপর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে—সালিসে এমন সিদ্ধান্ত হয়। রাত হয়ে যাওয়ায় প্রতিবেশী পারভিনের বাড়িতে শাহীনের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। পরদিন বেলা তিনটার দিকে শাহীনকে একটি ইজি বাইকে করে চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য হাজিরহাট বাসস্ট্যান্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু যাওয়ার পথে শাহীন ইজিবাইক থেকে নেমে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, ইজিবাইক থেকে নেমে আবার সালাউদ্দিনের বাড়ির কাছে চলে আসেন শাহীন। বিকেল পাঁচটার দিকে ওই বাড়ির পাশে একটি সয়াবিন খেতের ভেতর ঢোকেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে একটি হাতব্যাগ ছিল। কিছুক্ষণ পর আগুন ধরানো অবস্থায় বের হয়ে ছুটে গিয়ে পাশে আরেক বাড়ির গোয়ালঘরে ঢুকে যান শাহীন। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজ বেলা ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান শাহীন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।