Thank you for trying Sticky AMP!!

গৃহকর্মী, ব্যবসায়ীসহ তিনজন খুন

বরগুনার আমতলী উপজেলায় গত সোমবার ফরিদ হোসেন হাওলাদার (৩২) নামে এক গরু ব্যবসায়ীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় গতকাল মঙ্গলবার যৌতুক না পেয়ে শাহনাজ বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বৈশাখী পাড়া গ্রাম থেকে সুমাইয়া আক্তার ওরফে প্রিয়া (১৫) নামে এক গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পূজাখোলা গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে ফরিদ হোসেন ও একই এলাকার গরু ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মুন্সী গরু কেনার জন্য পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বানাই বাজারে যান। সেখান থেকে বিকেলে ফরিদ একটি গরু কিনে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। রাত ১০টার দিকে নিজ গ্রামের ফকু দফাদারের বাড়ির কাছে এলে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ফরিদকে এলোপাতাড়ি কোপায়। এ সময় মিজান কৌশলে পালিয়ে আশপাশের লোকজনকে খবর দিলে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ফরিদকে মৃত দেখতে পান। ফরিদের সঙ্গে থাকা ৫০ হাজার টাকা দুর্বৃত্তরা নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল্লাহ বলেন, নিহত ফরিদের মাথা, পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আটটি আঘাত রয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় বলেন, ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিজানসহ ওই এলাকার তিনজনকে গতকাল সকালে থানায় আনা হয়েছে।
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় নিহত গৃহবধূর ছোট ভাই শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, গত বছর ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার বানাই গ্রামের রং মিস্ত্রি মাহাবুব মল্লিকের সঙ্গে শাহানাজ বেগমের বিয়ে হয়। যৌতুকের দাবিতে মাহাবুব স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর করতেন। সম্প্রতি শাহনাজ ধাওয়া নলকাটায় বাবার বাড়িতে চলে আসেন। গত ২৫ আগস্ট তিনি ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচির ভান্ডারিয়া উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক দাবি এবং নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মাহাবুব ও শাহনাজ ব্র্যাক কার্যালয়ে হাজির হন। এরপর শাহনাজ বাবার বাড়ি যাওয়ার পথে উপজেলার ধাওয়া ফুলতলা এলাকায় মাহাবুব অটোরিকশা থেকে তাঁকে (শাহনাজ) জোর করে নামিয়ে মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যান। তাঁকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা একটার দিকে তিনি মারা যান।
ভান্ডারিয়া থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, মাহাবুবকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
নড়িয়া থানা ও মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ নড়িয়া গ্রামের সুমাইয়া তাঁর মায়ের সঙ্গে নানার বাড়িতে বসবাস করত। চার বছর আগে সে পার্শ্ববর্তী বৈশাখী পাড়া গ্রামের বাবুল চৌকিদারের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। সোমবার রাতে বাবুল চৌকিদারের বাড়ি থেকে মুঠোফোনে সুমাইয়ার পরিবারকে জানানো হয় বাবুল চৌকিদারের স্ত্রী অসুস্থ। তাঁদের কেউ যেন বাড়িতে আসেন। তখন সুমাইয়ার মামি মুক্তা বেগম রাত নয়টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান সুমাইয়ার লাশ মেঝেতে রাখা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
মুক্তা বেগম অভিযোগ করেন, অভাবের তাড়নায় তাঁদের মেয়েকে গৃহকর্মীর কাজে পাঠিয়েছিলেন। তাঁকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে গতকাল বৈশাখী পাড়া গ্রামে গিয়ে বাবুল চৌকিদারকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ ছিল। বাবুলের স্ত্রী কোহিনুর বেগম বলেন, ‘প্রেমঘটিত ব্যাপার নিয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। এতে আমাদের পরিবার জড়িত নয়।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, বরগুনা, শরীয়তপুর ও মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি]