Thank you for trying Sticky AMP!!

ঘাটাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের দালাল চক্র এই হামলা চালায়

টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের দালাল চক্রের হামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান (৩৫) গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার সকালে দিগড় ইউনিয়নের আলুপাকুটিয়া গ্রামে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঘাটাইল থানায় আটজনকে আসামি করে মামলা করেছেন মেহেদী হাসানের বাবা।

মেহেদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ছিলেন।

মেহেদী হাসানের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত মার্চে আলুপাকুটিয়া গ্রামে ঝড়ে ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান ফুলজান নামের এক নারী। এ ঘটনার পর বিদ্যুৎ বিভাগের একটি দালাল চক্র ফুলজান বেগমের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করতে বাধ্য করে। ঘটনার কোনো আইনগত পদক্ষেপও নিতে দেয়নি ওই চক্র। এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন ওই গ্রামের ছেলে মেহেদী হাসান। এ কারণে তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত ছিল দালাল চক্র।

মেহেদী হাসানের বোন শাহনাজ পারভীন বলেন, আলুপাকুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা ও তাঁর চাচাতো ভাই আজমত ওরফে পাঙ্গাস এলাকায় বিদ্যুৎ–সংযোগ এনে দেওয়ার কথা বলে গ্রামের লোকদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার সময় নিয়ম অনুযায়ী তার ও খুঁটি না দিয়ে নিম্নমানের তার ও বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করা হয়। এ কারণে অল্প বাতাসেই তার ছিঁড়ে পড়ত। এমনই এক ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ফুলজানের মৃত্যু হয়। মেহেদী হাসান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ব্লগে এর প্রতিবাদে লেখালেখি করেন। বিদ্যুতের দালাল চক্রের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষকে প্রতিবাদে উদ্বুদ্ধ করেন। এ নিয়ে ওই চক্র মেহেদীকে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকালে এক চাচা ও গ্রামের একটি ছেলের সঙ্গে মেহেদী নদীর পাড়ে বসেছিলেন। এ সময় মোস্তফাসহ ১০ থেকে ১২ জন এসে তাঁর ওপর হামলা চালান। মাথাসহ সারা শরীরে কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। লাঠির আঘাতে মেহেদীর বাঁ হাত ভেঙে যায়। তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এ ঘটনায় মেহেদীর বাবা নূরুল ইসলাম বাদী হয়ে ঘাটাইল থানায় মোস্তফাসহ আটজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন মোস্তফার ছেলে ফিরোজ (২২), চাচাতো ভাই আজমত ওরফে পাঙ্গাস (৪২), মজনু মিয়া (৪৫), আবদুল লতিফ (৪০), শফিকুল ইসলাম (৪২), ফরজ আলীর ছেলে আপেল (২৫) ও নজরুল (৩৬)।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘাটাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন কুমার পাল জানান, মামলাটি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা মেহেদী হাসান ‘দেহঘড়ি’ নামে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি পত্রিকায় কাজের পাশাপাশি ফেসবুক ও ব্লগে লেখালেখি করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে ২০০৭ সালের আগস্টে সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন।

এ ব্যাপারে মোস্তফার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ–সংযোগের জন্য গ্রাম থেকে টাকা তোলার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সঠিক নয়। মেহেদীর ওপর হামলার সঙ্গে তিনি বা তাঁর কেউ জড়িত নন বলেও জানান তিনি।