Thank you for trying Sticky AMP!!

ঘুষ দিলে পাস, না দিলে ফেল!

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষের দাবিতে অনলাইনের ফলাফল আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ কলেজের ঠিকানায় তাঁদের কৃতকার্য হওয়ার নম্বরপত্র পাঠানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহীতে ১০ জন শিক্ষার্থী সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।

তাঁরা রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পুরান তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক। তিনি বলেন, দুর্গাপুর উপজেলার পুরান তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ১৬ জন শিক্ষার্থী ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ফলাফল প্রকাশিত হলে অনলাইনে তাঁদের নামের বিপরীতে ‘রিপোর্টেড’ দেখানো হয়। শিক্ষার্থীরা তাঁদের খাতা পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করলে ‘রিপোর্টেড’-এর পরিবর্তে ১০ জন শিক্ষার্থীকে সরাসরি অকৃতকার্য দেখানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই ১০ পরীক্ষার্থীর প্রবল আত্মবিশ্বাস রয়েছে। কিছুতেই তাঁদের অকৃতকার্য হওয়ার কথা নয়।

তাঁরা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পালের শরণাপন্ন হলে তিনি সনদ লেখক মো. জাহিদুর রহমান ও উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খোরশেদ আলমের সঙ্গে দেখা করতে বলেন। এই দুই কর্মকর্তা তাঁদের এই জটিলতা নিরসন করে দেওয়ার বিনিময়ে জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। উচ্চতর শ্রেণিতে ভর্তির আশায় ১০ জন মিলে দুই লাখ টাকা ওই দুই কর্মকর্তাকে দেন। এরপর কলেজে তাঁদের নম্বরপত্র পাঠানো হয়। তাতে ওই ১০ শিক্ষার্থীকে কৃতকার্য দেখানো হয়, কিন্তু তাঁরা অনলাইনে গিয়ে আগের ফলাফলই দেখতে পান। আবার এই শিক্ষার্থীরা ওই দুই কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেন। এবার তাঁরা বলেন, জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা হিসেবে তাঁদের ৩ লাখ টাকা দেওয়ার কথা। তাঁরা দিয়েছেন দুই লাখ টাকা। বাকি এক লাখ টাকা পরিশোধ, বকশিশসহ আরও দুই লাখ টাকা দিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ওই টাকা না দেওয়ার কারণেই অনলাইনে ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছে না।

বিষয়টি জানানোর জন্য ওই শিক্ষার্থীরা ১৫ নভেম্বর মহাপরিচালকের (ডিজি) কার্যালয়ে অভিযোগ করতে গেলে কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের ভেতরে ঢুকতে দেননি। পরে ওই দিনই তাঁরা বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডের সচিব আলমগীর হোসেন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, সিলেবাস-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গত ৯ অক্টোবর সুশীল কুমার পালের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজশাহীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এই খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই অকৃতকার্য ঘোষিত ৩৫০ জন শিক্ষার্থীকে কৃতকার্য ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমানে অনলাইন ফলাফলে পাস অথচ নম্বরপত্রে অকৃতকার্য এমন জটিলতায় রাজশাহীসহ সারা দেশে কারিগরি বোর্ডের প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী ভুগছেন।

রাজশাহীর ১০ শিক্ষার্থীর ফলাফল-সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে জানতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ লেখক জাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। বিষয়টি তাঁর জানাও নেই।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পাল গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কোনো কথা বলবেন না। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। যা বলার তারাই বলবে।