Thank you for trying Sticky AMP!!

ছাত্রীর গায়ে আগুনের অভিযোগ, রাজবাড়ীতে গ্রেপ্তার ২

ফাইল ছবি

রাজবাড়ী সদর উপজেলায় গ্রামের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে স্কুলশিক্ষার্থীর গায়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন শিল্পী বেগম (৪৫) ও গোলাম রায়হান সেতু (২২)। 

শিল্পী মামলার একমাত্র এজাহারভুক্ত আসামি। তিনি পাঁচুরিয়া ইউপির খোলাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। অপরজন শিল্পীর বোনের ছেলে। তাঁর বাবার নাম মো. বাবলু। তাঁকে মামলার সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ভাই আগুন দেওয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিলে বিষয়টি সবার নজরে আসে।
এ বিষয়ে আজ রোববার প্রথম আলোর শেষ পাতায় ‘হাত-পা বেঁধে ছাত্রীর গায়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এ বিষয়ে আজ বেলা আড়াইটায় সদর থানায় প্রেস ব্রিফিং করেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আসমা সিদ্দিকা মিলি। এ সময় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা রাজবাড়ী সদর থানায় একজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। প্রধান আসামি শিল্পীকে আজ দুপুর ১২টার দিকে সদর থানার গোয়ালন্দ মোড় পেট্রলপাম্প এলাকা থেকে ও সেতুকে খানখানাপুর থেকে রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
লিখিত অভিযোগে ওই শিক্ষার্থীর বাবা জানান, গত ১২ এপ্রিল তাঁর মেয়ে রিকশায় করে যাচ্ছিল। এ সময় দেওয়ানপাড়া পৌঁছালে অজ্ঞাত যুবকেরা তার পথরোধ করে। তাকে চাকু বের করে ভয়ভীতি দেখিয়ে অশ্লীল ছবি তোলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শিল্পী তাঁর মেয়েকে বাড়ি থেকে কৌশলে ডেকে তার (মেয়ের) ছেলেবন্ধু ভান্ডারিয়া গ্রামের রাজুর বাড়িতে নিয়ে যান। তাঁরা রাজুর বাড়ি থেকে আড়াই লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলেন। রাজুর পরিবারের লোকজন তাঁর মেয়েকে নিয়ে শিল্পীর বাড়িতে যান। খবর পেয়ে তিনি তাকে নিয়ে আসেন। ৫ জুন সকালে বাড়ির পাশে পুকুর থেকে গোসল করে আসার সময় পেছন থেকে লাঠি দিয়ে তাঁর মেয়ের মাথায় আঘাত করা হয়। এতে মেয়ে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে পল্লি চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। এরপর ৬ জুন দুপুরে তাঁর মেয়েকে বাড়ি থেকে চার ব্যক্তি তুলে নিয়ে শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয়। কিন্তু মাটিতে গড়াগড়ি করায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছে সে।

শিল্পী বেগম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে আমার দিন যাচ্ছে। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। মেয়েটির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। আমি পুলিশের ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে ছিলাম।’
ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলায় শিল্পী বেগমসহ অজ্ঞাত আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে। প্রধান আসামিসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এসপি আসমা সিদ্দিকা মিলি বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। আমরা নিবিড়ভাবে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছি। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। অপরদিকে শিল্পীর মেয়েকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তাকে আটক হয়নি। ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষার্থী মেয়েটিকে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’