Thank you for trying Sticky AMP!!

ছুরির বাঁটে লেগে থাকা রক্ত ধরিয়ে দিল খুনিকে

নিহত আতিফ শেখ
>
  • তিন বন্ধুর মধ্যে মাইসনাম উইনসন ‘স্মৃতিভ্রষ্ট’ হয়ে পড়েন।
  • রক্তমাখা ছুরির বাঁটে লেগে ছিল খুনির রক্ত
  • লেগে থাকা রক্তের নমুনার সঙ্গে উইনসনের রক্তের নমুনার মিল ছিল

তিন কক্ষের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন চার বন্ধু। সবাই ভারতীয়। তাঁরা পড়তেন চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসিতে। সবাই মেডিকেলের শিক্ষার্থী। হঠাৎ এক রাতে তাঁদের ফ্ল্যাটে খুনের ঘটনা ঘটে। খুন হন তাঁদেরই এক বন্ধু। কিন্তু খুনি কে? সেই রাতে ফ্ল্যাটে অন্য কেউ ঢোকেনি। বাকি তিন বন্ধু দাবি করলেন, খুনের ঘটনায় তাঁরা জড়িত নন। পুলিশও ঘটনার কূলকিনারা করতে পারছিল না। ঠিক যেন রহস্যোপন্যাসের মতোই এগোতে থাকে এই কাহিনি।

সত্য এই ঘটনার রহস্য অনুসন্ধানের জন্য পুলিশের কাছে আলামত হিসেবে ছিল সেই কক্ষ থেকে উদ্ধার করা ছোপ ছোপ রক্ত লেগে থাকা বিছানার চাদর এবং রক্তমাখা একটি ছুরির বাঁট। পুলিশের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে তোলে আরেকটি ঘটনা। বাকি তিন বন্ধুর একজন ‘স্মৃতিভ্রষ্ট’ হয়ে পড়েন। তাঁর নাম মাইসনাম উইনসন। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করেন তিনি। একপর্যায়ে আদালতের নির্দেশে চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে পুলিশ। দীর্ঘ পরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানান, তিনি স্মৃতিভ্রষ্ট হননি। সন্দেহ আরও বাড়ে পুলিশের। কিন্তু প্রমাণ কী? হত্যাকাণ্ডের প্রায় আট মাস পর গতকাল সোমবার সেই প্রমাণ হাতে পায় পুলিশ। রক্তমাখা ছুরির বাঁটে লেগে ছিল খুনির রক্ত।

২০১৭ সালের ১৪ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম নগরের আবদুল হামিদ সড়কের লেকভিউ সোসাইটির একটি আবাসিক ভবনের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয় মো. আতিফ শেখকে। ঘটনাস্থলে পাওয়া রক্তমাখা ছুরির বাঁটে খুনির রক্ত রয়েছে কি না, তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় ঢাকায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ল্যাবে। ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে, ওই রক্ত উইনসনের।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রামের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা ছুরি, ছুরির বাঁট এবং বিছানার চাদরের রক্তের নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায়, চাদর ও ছুরিতে লেগে থাকা রক্তের নমুনা একই ব্যক্তির (আতিফ)। কিন্তু ছুরির বাঁটের রক্তের নমুনা ভিন্ন ব্যক্তির। তিনি বলেন, ছুরির বাঁটের রক্তের নমুনার সঙ্গে উইনসনের রক্তের নমুনার মিল রয়েছে। এতে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনিই আতিফের খুনি। নিহত আতিফের আরেক বন্ধু গুরঙ্গ নিরাজের রক্তের নমুনার সঙ্গে ছুরির বাঁটে লেগে থাকা রক্তের নমুনার মিল পাওয়া যায়নি।

ওই ফ্ল্যাটে আতিফ, গুরঙ্গ, উইনসনের পাশাপাশি তাঁদের এক নারী (ভারতীয়) সহপাঠী থাকতেন।