Thank you for trying Sticky AMP!!

জঙ্গিদের হাতেই খুন চাকপাড়ার বৌদ্ধভিক্ষু

প্রতিকী ছবি

বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারির উপর চাকপাড়ায় গত বছরের ১৩ মে রাতে বৃদ্ধ বৌদ্ধভিক্ষুকে জঙ্গিরাই হত্যা করেছিল। তবে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বাইশারির জঙ্গি সংগঠক মোশারফ হোসেন (ওরফে লোকমান, ওরফে সোহেল) কুমিল্লার নাসির নগরের আতিয়া মহলের অভিযানে মারা গেছেন। গ্রেপ্তার জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে এ রকম তথ্য পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।

 বান্দরবানের মুখ্য নির্বাহী হাকিম আদালতের জেনারেল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (জিআরও) জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, গতকাল বুধবার বৌদ্ধভিক্ষু হত্যা মামলার আসামি তিন জঙ্গিসহ গ্রেপ্তার আটজনের মধ্যে ছয়জন আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। অপর দুজনের মধ্যে একজন জামিন নেওয়ার পর পলাতক রয়েছেন এবং আরেকজন অন্য একটি আদালতে হাজিরা দিতে গেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছরের ১৩ মে রাতে বাইশারি ইউনিয়নের বাইশারির উপর চাকপাড়ার নতুন ভাবনা বিহারের বৃদ্ধ ভিক্ষু উ গাইন্দ্যাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থেকে সন্দেহ করা হচ্ছিল জঙ্গিরাই তাঁকে হত্যা করে থাকতে পারে। কিন্তু বান্দরবানের পুলিশ প্রায় ছয় মাস তদন্ত করেও হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি। গত বছরের ডিসেম্বরে মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই কক্সবাজার অঞ্চলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পিবিআই-এর পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খায়রুল আলম গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি প্রায় এক বছর ধরে মামলাটি তদন্ত করছেন। এ মাসের মধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হতে পারে। গত ১৫ মার্চ (এ বছর) সীতাকুণ্ডে জঙ্গি অভিযানে নিহত ও গ্রেপ্তার জঙ্গিরা বাইশারির বাসিন্দা হিসেবে শনাক্ত হওয়ায় বৌদ্ধভিক্ষু মামলার তদন্তে মোড় ঘুরে যায়। পরে সেখানে গ্রেপ্তার জঙ্গি দম্পতি-জহিরুল হক ও রাজিয়া সুলতানা ওরফে আরজিনা এবং কুমিল্লার চান্দিনায় সড়কে তল্লাশিকালে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ে পালানোর সময় গ্রেপ্তার হওয়া হাসানকে মামলায় আসামি করা হয়। জহিরুল হক দম্পতির বাড়ি বাইশারি ইউনিয়নের যৌথ খামারপাড়ায় এবং হাসানের বাড়ি একই ইউনিয়নের করলিয়াঘানায়।

খায়রুল আলম বলেন, তিন জঙ্গিকে রিমান্ডে নিয়ে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জঙ্গি হাসান জানিয়েছেন, বৌদ্ধভিক্ষু উ গাইন্দ্যাকে মোশারফ হোসেন হত্যা করেছেন এবং তিনি মোশারফের সঙ্গে ছিলেন। উ গাইন্দ্যা হত্যাকাণ্ডের পর তাঁরা দুজন বাইশারি ছেড়েছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা খায়রুল আলম বলেন, তদন্ত করে দেখা গেছে, মোশারফ হোসেন ছিলেন বাইশারি এলাকার জঙ্গি সংগঠক। তাঁর মাধ্যমে জহিরুল হক, জহিরুল হকের ভগ্নিপতি কামাল উদ্দিন (সীতাকুণ্ডে নিহত) ও হাসান জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েন। মোশারফ হোসেন সীতাকুণ্ডের আমিরাবাদে সোহেল নামে সাধনকুটির ভাড়া নিয়েছিলেন এবং লোকমান নামেও তিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন। তবে জঙ্গিরা ২৯ জুন রাতে বাইশারি ইউনিয়নের ধাবনখালীপাড়ার বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা মংশৈলুং হত্যার ঘটনা ঘটানোর ব্যাপারে স্বীকার করেননি।

বাইশারি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম জানিয়েছেন, মোশারফ হোসেনের বাড়ি দিনাজপুরে। রাবার বাগানে কাজ করার অজুহাতে তিনি বাইশারি এসেছিলেন। বাইশারি বাজারে হাসানের পান, সিগারেট ও চিপসের দোকানে তাঁর আড্ডা ছিল। বাজারে শীতের কাপড়ও বিক্রি করতেন তিনি। কিন্তু বাইশারির কেউ ধারণাও করতে পারেনি তিনি জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত।