Thank you for trying Sticky AMP!!

জঙ্গিবিরোধী শোভাযাত্রায় 'পলাতক' জামায়াত নেতা

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম মণ্ডলের বিরুদ্ধে ডজন খানেক মামলা বিচারাধীন। আদালতের নথি অনুযায়ী তিনি পলাতক আসামি। দুটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এরপরও গত সোমবার পুলিশের উপস্থিতিতে তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী শোভাযাত্রায় অংশ নেন।

উপজেলা প্রশাসন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ শোভাযাত্রার আয়োজন করে। এতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ছাড়াও বগুড়া-৪ (কাহালু–নন্দীগ্রাম) আসনের সাংসদ রেজাউল করিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. শরীফুন্নেসা, নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান শামিম ইকবাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুর রহমান প্রমুখ অংশ নেন। শোভাযাত্রা শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী সমাবেশে বক্তব্যও দেন নুরুল ইসলাম।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতের নেতা নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নাশকতার ১৫টি মামলা রয়েছে। অধিকাংশ মামলায় তদন্ত শেষে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ৩ মার্চ জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চাঁদে দেখার গুজব ছড়িয়ে উপজেলা পরিষদে বারুদ ছিটিয়ে ১৭টি দপ্তর পুড়িয়ে দেওয়া, থানায় হামলা এবং ইউএনও, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের গাড়ি পোড়ানোসহ সহিংসতা ও নাশকতার চার মামলায় নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

বগুড়ার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, বিশেষ আদালতে বিচারাধ
ীন
দুটি মামলায় নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিচারক। তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বগুড়া আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালত থেকে ২৭ জুন ও গত সোমবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরপরই তা তামিলের জন্য নন্দীগ্রাম থানায় পাঠানো হয়। এখন তা তামিলের দায়িত্ব নন্দীগ্রাম থানার পুলিশের।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নথিতে স্বাক্ষর ছাড়াও নিয়মিত তাঁর দপ্তরে বসছেন। সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও অংশ নিচ্ছেন। সোমবার তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী সমাবেশ-শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন। শোভাযাত্রায় নন্দীগ্রাম থানার ওসিও অংশ নেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুর রহমান বলেন, ‘জামায়াত নেতা নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরপরই তা মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে আমিও ওসিকে জানিয়েছিলাম, কিন্তু তিনি তা আমলে নেননি। উল্টো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা আসামির সঙ্গেই ওসি সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের দায়িত্ব ছিল পুলিশের। তা ছাড়া নাশকতার ‘দেড় ডজন’ মামলার আসামিকে সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রা ও সমাবেশে অতিথি করাটাও ঠিক হয়নি।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্যই আমার বিরুদ্ধে এসব নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়। বিচারাধীন এসব মামলায় বর্তমানে হাইকোর্ট থেকে জামিনে রয়েছি। এই মুহূর্তে কোনো মামলাতেই আমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নেই।’

জানতে চাইলে ওসি হাসান শামিম বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত থেকে জারি করা কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এখনো তিনি হাতে পাননি। পরোয়ানা থাকলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতো।