Thank you for trying Sticky AMP!!

টাকা নিলেও দেওয়া হচ্ছে না 'ডিজিটাল' পরিচয়পত্র

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যন্ত্রে পাঠযোগ্য ‘ডিজিটাল’ পরিচয়পত্র দেওয়ার নামে কয়েক বছর ধরে অতিরিক্ত ফি নেওয়া হচ্ছে। তবে প্রশাসনের টালবাহানায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখনো এ পরিচয়পত্র পাননি। স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এ পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তই হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী প্রায় ৬ হাজার ১৯৮ জন। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে স্নাতকোত্তর শ্রেণি ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদেরডিজিটাল পরিচয়পত্র দেওয়ার নামে কার্ড ফি ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫০ টাকা করা হয়। ২০১৪ সাল থেকে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত শুধু ২০১৪ ও ২০১৬ সালে ভর্তি হওয়া ২ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে১ হাজার ৬০০শিক্ষার্থীকে এ পরিচয়পত্র দেওয়াহয়েছে। তাঁরা ছাড়া ২০১৫ সালে ভর্তি হওয়া ১ হাজার ২০০ জনসহ গত তিন বছরে প্রায় ৫ হাজার ৫৯৮ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২৫০ টাকা করে নেওয়া হলেও এ পরিচয়পত্র দেওয়া হয়নি। তাঁদের মধ্যে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি শ্রেণির প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী এ পরিচয়পত্র ছাড়াই শিক্ষাজীবন শেষ করে চলে গেছেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্রই বাস কার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। অথচ প্রশাসন বাস কার্ডের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে স্নাতকে প্রতি সেমিস্টারে ১৫০ টাকা, স্নাতকোত্তরে তিন সেমিস্টারে ১ হাজার ৭৫ টাকা এবং পিএইচডি কোর্সে সর্বোচ্চ ৭২০ টাকা করে নিচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীইমরুল কায়েস বলেন, ‘তিন বছর ধরে টাকা নিলেও মাস্টার্স ও পিএইচডি শিক্ষার্থীরা কোনো রকমে কাগজে ছাপানো পরিচয়পত্র দিয়েই শিক্ষাজীবন পার করেছি। তাহলে আমাদের দেওয়া টাকাগুলো যাচ্ছে কই?’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র সরবরাহের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক বিভাগের। শিক্ষাবৃত্তি, নম্বরপত্র, সনদ, প্রত্যয়নপত্রসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাগজপত্র উত্তোলনে পরিচয়পত্র আবশ্যক। নতুন ডিজিটাল পরিচয়পত্র না পেয়ে ২৫০ টাকা দিয়েও বাধ্য হয়ে ৩০ টাকা দামের কাগজে ছাপানো পরিচয়পত্র দিয়ে এসব কাজ করছেন বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। ২০১৪ সালের পর থেকে মাস্টার্সে ভর্তি হওয়া প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী টাকা দিয়েও কার্ড না পেয়ে ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গেছেন।

সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আলমগীর হোসেন বলেন, বিভাগে লোকবলের অভাবে ঠিক সময়ে পরিচয়পত্র সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। স্নাতক পর্যায়ে পরিচয়পত্র দেওয়া শেষ না হলে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সরবরাহ করা সম্ভব নয়।

গতকাল বুধবার ছাত্রবিষয়ক বিভাগের নিচতলায় গিয়ে দেখা যায়, অনেক শিক্ষার্থী ২৫০ টাকা দিয়েও প্রয়োজনের তাগিদে কাগজের ছাপা পরিচয়পত্র নিচ্ছেন, তা-ও আবার ল্যামিনেট না করা।

উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী আল মুক্তাদির বলেন, ল্যামিনেট না করা একটি কাগজ হাতে ধরিয়ে দেওয়ায় তিনি নেননি।

উপাচার্য আলী আকবর বলেন, শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল পরিচয়পত্র না পাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। খুব শিগগির যাতে এ পরিচয়পত্র সরবরাহ করা হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।