Thank you for trying Sticky AMP!!

টাঙ্গাইলে নকল সিগারেট কারখানার সন্ধান

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নকল ও অবৈধ সিগারেট কারখানার সন্ধান পেয়েছে ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কর্তৃপক্ষ। অটো রাইস মিলের আড়ালে তারা নকল সিগারেট উৎপাদন করত। ভ্যাট কর্তৃপক্ষ কারখানায় তালা দিয়েছে। অপরাধীদের আটকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ঢাকা পশ্চিমের ভ্যাট কমিশনার মইনুল খান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ওপর ভিত্তি করে আজ ভোররাতে ঢাকা পশ্চিমের একটা প্রিভেন্টিভ দল টাঙ্গাইল শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ওই কারখানায় অভিযান চালায়। কারখানাটি বাইরে অটো রাইস মিলের সাইনবোর্ড টানিয়ে রেখেছিল। কিন্তু ভেতরে সিগারেট উৎপাদনের যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়।

অভিযানে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ‘গোল্ড লিফ’ ব্র্যান্ডের প্যাকেট পাওয়া গেছে। যাচাই করে দেখা যায় এসব সিগারেট নকল। এ ছাড়া অভিযানে বিপুল পরিমাণ উন্নতমানের সিগারেট ফিল্টার উদ্ধার করা হয়। অভিযানে সিগারেটের তিন টন তামাক জব্দ করা হয়। এসব তামাক প্রক্রিয়াজাতকৃত এবং সিগারেটে ব্যবহারের উপযোগী।

প্রিভেন্টিভ দলটি কারখানায় স্থাপিত অতি উন্নতমানের দুই সেট মেশিনও জব্দ করে। অভিযানে ২০ সদস্যবিশিষ্ট ভ্যাট কর্মকর্তার নেতৃত্ব দেন উপকমিশনার আবদুস সাদেক। টাঙ্গাইল জেলা র‍্যাবের একটি দল অভিযানে সহায়তা করে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি এক বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে নকল সিগারেট উৎপাদন করে আসছিল। এসব সিগারেটের মধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ব্র্যান্ডই বেশি।

জানা গেছে, এই কারখানার জন্য কোনো ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া হয়নি। ভ্যাটের নিবন্ধন ছাড়া এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা অবৈধ। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ ভ্যাট রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে ক্রেতারাও নকল সিগারেট কিনে প্রতারিত হচ্ছেন।
উল্লেখ্য, সিগারেট থেকে আহরিত ভ্যাট দেশের আহরিত রাজস্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশ। আর এনবিআরের অংশ প্রায় এক-দশমাংশ। সিগারেট খাতে মোট ভ্যাটের পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।

মইনুল খান জানান, অভিযানের সময় উপস্থিত নিরাপত্তারক্ষী শফিকুল ইসলামকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কারখানার জায়গাটির মালিক স্থানীয় শাহ আলম। তবে করিম টোব্যাকোর কেউ এটি পরিচালনা করেন। কারখানা থেকে কুষ্টিয়ার করিম টোব্যাকোর কিছু কাগজপত্র পাওয়া যায়।

অভিযানের খবর পেয়ে মালিকপক্ষ ও তাঁদের সহযোগীরা আগেই পালিয়ে যান। তবে প্রাপ্ত আলামত ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওই কারখানায় স্থাপিত উন্নতমানের মেশিন দিয়ে দিন প্রায় ২০ লাখ শলাকা সিগারেট প্রস্তুত করা সম্ভব। সে হিসাবে এ ধরনের একটি গোপন প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চস্তরের সিগারেট উৎপাদনের ভিত্তিতে মাসে গড়ে প্রায় ৫১ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি হতে পারে।
এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। অনুসন্ধানের পর অন্যান্য আইনেও মামলা করা হবে।