Thank you for trying Sticky AMP!!

ডাল নয়, গাছ কেটে সাবাড়!

রাস্তার পাশ থেকে মেহগনিগাছ কেটে নেওয়া হয়েছে l প্রথম আলো

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী এলাকায় জেলা পরিষদের নয়টি বড় গাছ কেটে আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দাবি, জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েই গাছ কাটা হয়েছে।
জেলা পরিষদের প্রশাসক মুনসুর আহমেদ বলেন, বিদ্যুতের তাঁর টানার জন্য কয়েকটি গাছের ডাল কাটার কথা বলা হয়েছে। গাছ কাটার বিষয়টি তিনি জানেন না। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
জেলা পরিষদের জরিপকারী (সার্ভেয়ার) হাসানুজ্জামান গত সোমবার বলেন, গাছ কাটার জন্য জেলা পরিষদের প্রশাসক তাঁকে দায়িত্ব দেন। স্থানীয় ব্যক্তিদের চাপে কয়েকটি গাছ কয়েকজনকে দিতে হয়েছে। সাত-আটটি গাছ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আবু তালেব সরদারের জিম্মায় রাখা রয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হক সরদার ও সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন কুমার পাল বলেন, চৌমুহনী থেকে পশ্চিম দিকে চলে যাওয়া জেলা পরিষদের রাস্তার বাঁ পাশ থেকে বড় বড় কয়েকটি গাছ করাত দিয়ে কেটে নেওয়া হয়েছে। গত ২৪ ও ২৫ মার্চ দুই দিন ধরে পল্লী বিদ্যুতের লাইন টানার নামে গাছগুলো জেলা পরিষদের জরিপকারী হাসানুজ্জামানের উপস্থিতিতে কাটা হয়। এ সময় তাঁদের সহযোগিতা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আবু তালেব সরদার, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশেক ইকবাল, একই ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনসহ কয়েকজন।
চৌমুহনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আহসান উল্লাহ জানান, ১৯৮২ সালে সরকার মানুষকে গাছ লাগানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করে। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে চৌমুহনী বাজার এলাকায় রাস্তার দুই পাশে প্রায় দুই শতাধিক গাছ লাগান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন বলেন, আটটি মেহগনি ও একটি কড়ইগাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। গাছগুলো আত্মসাৎ করার জন্য বিদ্যুৎ-সংযোগের বিষয়টিকে পুঁজি করা হয়েছে। করাত দিয়ে গোড়া থেকে কেটে নেওয়ার পর আড়াল করতে কাটা গাছের গোড়ায় ইট কিংবা ময়লা-আবর্জনা দিয়ে কৌশলে ঢেকে রাখা হয়েছে। গাছগুলো কেটে ডালপালা বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে গাছগুলো স্থানীয় একটি স মিলে রেখে এসেছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছিরউদ্দিন।
নাছিরউদ্দিন বলেন, তিনি গাছ কাটার সময় ছিলেন। কাঠের ব্যবসা করলেও তিনি গাছগুলো কেনেননি। গাছ সম্পর্কে আবু তালেব সরদার ও জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার হাসানুজ্জামান জানেন।
আবু তালেব সরদার জানান, বিদ্যুতের তাঁর টানার জন্য গাছ কাটার প্রয়োজন হওয়ায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তিনি একটি আবেদনপত্র নিয়ে জেলা পরিষদে যান। জেলা পরিষদের প্রশাসক মুনসুর আহমেদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সার্ভেয়ার হাসানুজ্জামানকে দায়িত্ব দেন। বিদ্যুতের তাঁর টানার সুবিধার্থে কয়েকটি গাছ তিনি নিয়ে যান। গাছ কাটিয়েছেন সার্ভেয়ার। তাঁরা সহযোগিতা করেছেন।