Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢামেকে চুরির উপদ্রব, চার শিশু আটক

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ফাইল ছবি

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে চার শিশুকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে।

আটক শিশুদের বয়স নয় থেকে ১১ বছর বছর। তাদের মধ্যে তিনজন রাজধানীর মুগদা-মান্ডা এলাকায় অন্যজন চিটাগং রোডে থাকেন।

ঢামেকে প্রায়ই রোগী ও তাদের স্বজনেরা অভিযোগ করে থাকেন, মোবাইল ফোন, টাকা, গয়না বা জুতা খোয়ার কথা। হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশও বলছে, এই চুরির সঙ্গে নারী-পুরুষ ও শিশুরাও জড়িত। প্রায়ই আটকের ঘটনা ঘটে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।

শনিবার আটক চার শিশুকে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়িতে দেওয়া হয়েছে। এই ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাচ্চু মিয়া জানান, তারা ঢামেকে আটক ব্যক্তিদের শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে থাকেন।

চার শিশু আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল উদ্দিন মোল্লাহ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোবাইল চুরির অভিযোগে ঢামেকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা তাদের আটক করে আমাদের কাছে দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি তদন্তের পর বলতে পারব।’ তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে এক রোগীর স্বজনের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন।

যে ব্যক্তির মোবাইল চুরির অভিযোগে এই চার শিশুকে আটক করা হয়েছে তাঁর নাম ইসরাফিল। বাড়ি ফরিদপুরে।

ইসরাফিল বলেন, গত কয়েক দিন আগে তাঁর বাবা সোলাইমানকে (৫৫) ঢামেকের নাক-কান-গলা বিভাগে ভর্তি করা হয়। তিনি সেবার জন্য বাবার সিটের পাশে থাকেন। শনিবার বিকেলে সিটের পাশে মোবাইলটি চার্জে দেন। সন্ধ্যায় সময় দুই শিশু হঠাৎ মোবাইলটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে লোকজন চিৎকার দিলে দৌড়ে গিয়ে তিনিসহ কয়েকজন তিন শিশুকে আটক করেন। পরে আনসারদের সহযোগিতায় অন্য শিশুকেও আটক করে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চোর ধরা পরেছে এমন সংবাদ শুনে অনেকেই ছুটে আসেন পুলিশ ফাঁড়ির কাছে। তাদের মধ্যে একজন পারভিন আক্তার, তিনি বলেন, তাঁদের বাড়ি বরিশাল জেলার মুলাদি উপজেলার নাজিরপুর গ্রামে। তাঁর মেয়ে সোনিয়া (৮) কিডনি রোগী, গত বুধবার থেকে ২০৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।

পারভিন বলেন, মেডিকেল থেকে চুরি হয় জেনে মেয়ের চিকিৎসার টাকা তিনি সঙ্গেই রাখতেন। শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ২য় গেটের কাছে দুই নারী তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতে মুখের সামনে কি যে দিল। পরে তিনি আর কিছুই বলতে পারেননি। পারভিনের ভাষ্য, পরে আশপাশের লোকজন তাঁকে হাসপাতালের বেডে নিয়ে যায়। জ্ঞান ফেরার পর দেখেন তাঁর গলার চেইন, কানের দুল ও সঙ্গে থাকা দশ হাজার টাকা নেই।

ঢামেকের প্রধান নিরাপত্তার দায়িত্বতে থাকা আনসার কমান্ডার মো. মুসলেহ উদ্দিন বলেন, এখানে চুরি হয়, এটা অস্বীকারের কিছু নেই। প্রতিদিন গড়ে পাঁচ থেকে সাতজনকে আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। এদের মধ্যে নারী-পুরুষ, শিশুও রয়েছে। হাসপাতালের ফাঁড়ি থেকে আটক ব্যক্তিদের থানায় নেওয়া হয়। তার পর কি হয়, তারা তা জানেন না।

মুসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘কিছু চোরকে একাধিক বার ধরেছি। থানাও দিয়েছি। তারা আবার জামিনে বের হয়ে একই ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। আজও চারজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছি।’

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘আমাদের ফাঁড়িতে আনলে, আমরা শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে থাকি।’ এক চোর একাধিকবার আটক করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার জনি (২৪) নামে একজন কে আটক করা হয়। তিনি হাতকড়া খুলে পালিয়ে যাওয়ার সময় আবার আটক করে থানায় দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক চুরির মামলা রয়েছে।

বাচ্চু মিয়া আরও বলেন, ‘আনসার সদস্যরা চোর সন্দেহ যাদেরই ধরে নিয়ে আসেন; এর মধ্যে দেখা গেছে অভিযোগকারী নেই, যা-ও থাকে—তারা বাদী হতে চান না। আমরা আটক ব্যক্তিদের থানায় পাঠিয়ে দিই।’

এক নারী বলেন, ‘আমার মোবাইলটি হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে গেছে। পরে চোরকে আটক করা পর মোবাইলটি পেয়েছি। কিন্তু পুলিশ বলে, থানায় গিয়ে মামলা করতে হবে। আমি মামলা করে কি করব। এসব তো আমি বুঝি না।’