Thank you for trying Sticky AMP!!

দেড় কোটি টাকার আমানত নিয়ে প্রতিষ্ঠান উধাও

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা থেকে গ্রাহকের দেড় কোটি টাকা নিয়ে গ্রামীণ কো-অপারেটিভ লিমিটেড নামের একটি সমবায়ী প্রতিষ্ঠানের লোকজন উধাও হয়ে গেছেন। গত ২২ অক্টোবর থেকে সমিতির প্রধান কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ১০ জন গ্রাহক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
গ্রাহকের লিখিত অভিযোগ ও উপজেলা সমবায় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে উপজেলার কালিবাড়ী এলাকায় ফারুক মিয়াজীর একটি ঘর ভাড়া নিয়ে গ্রামীণ কো-অপারেটিভ লিমিটেড শাহরাস্তি শাখার কার্যক্রম শুরু করে। নিবন্ধন নম্বর ৫৯৩।
উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় কচুয়া উপজেলার বিতারা বাজারে। পরে কচুয়ায় আরও দুটি, শাহরাস্তি, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও ফরিদগঞ্জে একটি করে শাখা খোলে। ২০১৩ সালে মন্ত্রণালয় সমবায় সমিতিগুলোর শাখার নিবন্ধন বাতিল করলে শাখাগুলো সংশ্লিষ্ট উপজেলা সমবায় কার্যালয় থেকে নতুন করে নিবন্ধন নেয়।
শাহরাস্তি উপজেলা সহকারী সমবায় কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, গত বছরের শেষ দিকে করা অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী গ্রামীণ কো-অপারেটিভ লিমিটেডের গ্রাহক প্রায় দেড় হাজার। এ সমিতিতে গ্রাহকের সঞ্চয়ী হিসাব ও এফডিআর বাবদ প্রায় দেড় কোটি টাকা জমা ছিল।
সমিতির ঘরের মালিক ফারুক মিয়াজী বলেন, মাসিক ৩ হাজার টাকায় তিনি ঘরটি ভাড়া দেন। এখানে সমিতির সাত-আটজন লোক কাজ করতেন। পূজার কথা বলে তাঁরা কার্যালয় বন্ধ করে চলে যাওয়ার পর আর আসেননি। প্রতিদিন অনেক গ্রাহক এসে কার্যালয়ের সামনে ভিড় জমান।
উপজেলার সূচীপাড়া গ্রামের নুর জাহান বলেন, মাসিক ১ হাজার ৮০০ টাকা লাভে তিন বছর আগে তিনি ৩ লাখ টাকা রেখেছিলেন। মেহের কালীবাড়ি বাজারের একটি কোকারিজ দোকানের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, তিনি একই লাভে দেড় লাখ টাকা রেখেছেন। দুই মাস পরপর তিনি লাভের টাকা তুলেছেন। লক্ষ্মী রানী নামের একজন গ্রাহক বলেন, তিনি ২ লাখ টাকা এফডিআর হিসেবে রেখেছেন। প্রতি মাসের লাভের টাকায় তিনি সংসার চালাতেন। এখন মূল টাকা হারিয়ে তিনি দিশেহারা। ক্ষুদ্র সঞ্চয়ী হিসেবে ইউসুফ মিয়ার ৭ হাজার টাকা, কামরুজ্জামানের ১৭ হাজার টাকা, মিলনী রানী ৪০ হাজার টাকা ও কামরুল হাসান ২৬ হাজার টাকা রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হাফিজ উদ্দিন বলেন, গ্রামীণ কো-অপারেটিভ জেলার সাতটি শাখায় কার্যক্রম পরিচালনা করত। কচুয়ার বিতারা ইউনিয়নের অলিউল্যাহ মোল্লাসহ পাঁচজন শেয়ারদার এ সমিতির মূল মালিক। সমিতির অন্য শাখাগুলো অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, পাঁচ-সাতজন গ্রাহক তাঁর কাছে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু সমিতির মাঠপর্যায়ে অনেক টাকা পাওনা রয়েছে। তারা মাঠপর্যায় থেকে টাকা তুলতে পারছে না।
ইউএনও সামিউল মাসুদ বলেন, পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ঠিকানা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সমিতির শাহরাস্তি শাখার ব্যবস্থাপক হযরত আলী মোল্লার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।