Thank you for trying Sticky AMP!!

ধলেশ্বরীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার লাশ

হুমায়ুন কবির সরকার। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের পানপাড়া এলাকায় ধলেশ্বরী নদী থেকে আজ রোববার হুমায়ুন কবির সরকার নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁকে কুপিয়ে ও পানিতে চুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত দুজনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

হুমায়ুন কবির সরকার (৪০) সাভারের ভরারি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি তিনি ব্যবসা করতেন।

সাভার ট্যানারি ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) অখিল রঞ্জন সরকার বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে হুমায়ুন কবির সরকার স্থানীয় রাজফুলবাড়িয়া বাজারে তাঁর ব্যবসায়িক কার্যালয়ে বসে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে একই এলাকার ফারুক হোসেন ওরফে পারভেজ ও আলমগীরের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৩২ জন লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁকে ধাওয়া করেন। প্রাণ বাঁচাতে তিনি বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধলেশ্বরী নদীতে লাফিয়ে পড়ে সাঁতরে অপর পাড়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় ট্রলার নিয়ে পারভেজ ও আলমগীর তাঁদের লোকজনসহ হুমায়ুনকে ধরে পানির মধ্যেই এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। একপর্যায়ে টেটাবিদ্ধ করে তাঁকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বয়ানে পুলিশ এসব তথ্য জেনেছে বলে তিনি জানান।

মামলার বাদী হুমায়ুনের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলমের দাবি, পারভেজ ও আলমগীর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী। তাঁদের অপকর্মে বাধা দেওয়ায় তাঁরা তাঁর ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম রেজা বলেন, পরিবার ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে হুমায়ুন কবিরকে হত্যার অভিযোগ করা হলেও তাঁর লাশ পাওয়া যাচ্ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ও স্থানীয় লোকজন নদীতে তল্লাশি করে লাশের হদিস করতে পারেনি। আজ সকালে পানপাড়া এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে তাঁর লাশ ভেসে ওঠে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার হুমায়ুন কবিরের ভাই জাহাঙ্গীর আলম সাভার মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় ফারুক হোসেন ওরফে পারভেজ, আলমগীরসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৩২ জনকে আসামি করা হয়।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মামলা দায়েরের পর ওই দিন রাতেই আমিরুল ইসলাম (৩৭), সজিব (১৯), ট্রলারের মাঝি মোশারফ হোসেন (৪৫), রুস্তম আলী (৩২) ও দেলোয়ার হোসেনকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শনিবার তাঁদের ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করে আমিরুল ও দেলোয়ারের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আদালত তাঁদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সজিব ও মোশারফ হোসেন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ায় আর রুস্তম অসুস্থ থাকায় আদালত তাঁদের জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন।

ট্যানারি ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক গোলাম নবী বলেন, পারভেজ, আলমগীর ও হুমায়ুন কবীর একসময় একই দলভুক্ত ছিলেন। নানা কারণে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সম্ভবত ওই দ্বন্দ্বের জের ধরেই হুমায়ুন কবিরকে হত্যা করা হয়েছে।