Thank you for trying Sticky AMP!!

নিজ বাসায় স্বামী-স্ত্রী ও দুই মেয়ের লাশ

কক্সবাজার শহরের গোলদীঘির পাড় এলাকার একটি বাসা থেকে পুলিশ বুধবার সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রী ও তাঁদের দুই শিশুকন্যার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বামীর লাশ গলায় ফাঁস লাগানো ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রাত আটটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিৎ কুমার বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, এক পরিবারের স্বামী-স্ত্রী ও দুই মেয়ের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্ত্রী ও দুই মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। অন্যদিকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় (ঝুলন্ত) পাওয়া যায় গৃহকর্তা সুমন চৌধুরীকে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে আসল রহস্য। পুলিশ চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই বাসায় পৃথকভাবে বসবাস করেন সুমন চৌধুরীসহ তাঁর অপর চার ভাই। সুমনের বড়ভাই আমীর চৌধুরী (৪৫) বলেন, প্রতিদিনের মতো বুধবার বেলা দুইটার দিকে সুমন (৩৩), তাঁর স্ত্রী বেবী চৌধুরী (২৮), মেয়ে অবন্তিকা চৌধুরী (৫) ও জ্যোতি চৌধুরী (৩) দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুমোতে যায়। কিন্তু বিকেল পাঁচটার পরও তাঁরা ঘুম থেকে না ওঠায় তাঁদের দরজায় টোকা দেন তিনি। এরপরও সাড়াশব্দ না পেয়ে তিনি স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর রাজ বিহারী দাশকে খবর দেন। সন্ধ্যায় রাজ বিহারী ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন দরজা-জানালা বন্ধ। ভেতরে কারও সাড়াশব্দ নেই। এরপর তিনি পুলিশকে খবর দেন। সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রণজিৎ কুমার বড়ুয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন।

ওসি রণজিৎ কুমার বড়ুয়া বলেন, টিনশেডে দুই তলার বাসার নিচতলার একটি কক্ষে একটি খাটের ওপর পড়ে ছিল সুমনের স্ত্রী বেবী ও দুই মেয়ের মরদেহ পাওয়া যায়। এরপর দুইতলায় সিলিংয়ের সঙ্গে গলায় রশি বাঁধা ঝুলন্ত অবস্থায় সুমনের লাশ পাওয়া যায়। বেবী চৌধুরী ও দুই মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পুলিশের ধারণা, সুমন চৌধুরী প্রথমে গলায় ফাঁস লাগিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করেন। এরপর দুই মেয়েকে হত্যা করেন।

রাত সাড়ে আটটায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার একেএম ইকবাল হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সুমনের সংসারে অভাব ছিল। অভাবের কারণেই তিনি স্ত্রীসহ দুই মেয়েকে হত্যা করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এ ব্যাপারে আরও তদন্ত চলছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পৌঁছালে হত্যার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।

পৌর কাউন্সিলর রাজবিহারী দাশ প্রথম আলোকে বলেন, গোলদীঘির পাড়ে সুমন চৌধুরী একটি দোকান ভাড়া নিয়ে প্রসাধন সামগ্রীর ব্যবসা শুরু করেন। বিক্রি কমে যাওয়ায় ছয় মাস আগে তিনি অন্য ব্যক্তিকে ভাড়া দেন। সেই টাকায় তিনি সংসার চালাতে পারছিলেন না। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি ছিল। সম্ভবত অভাবের কারণে তিনি স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

সুমন চৌধুরী মা বসুমতী চৌধুরী (৭৫) ছেলেসহ চারজনের মৃত্যুতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তিনি বিলাপের সুরে বলেন, কল্পনাও করিনি সুমন এভাবে সবাইকে নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে।