Thank you for trying Sticky AMP!!

নিজ ঘরে হাত-পা বেঁধে গৃহবধূকে হত্যাচেষ্টা, পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ

নারী নির্যাতন। প্রতীকী ছবি

স্বামীর আওয়াজ পেয়ে দরজা খোলেন গৃহবধূ মাসুদা বেগম। স্বামীর সঙ্গে ঘরে ঢোকেন আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজন মাসুদার গালে চড় দিয়ে তাঁকে বিছানায় ফেলে দেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলেন বাকিরা। এরপর ঘরে থাকা ফ্রিজের একটি খালি কার্টনে মাসুদাকে ঢোকানোর চেষ্টা করেন। পুরো ঘটনা জানালা দিয়ে দেখে ফেলে প্রতিবেশী এক শিশু। সে গিয়ে অন্য প্রতিবেশীদের খবর দিলে তাঁরা এসে মাসুদাকে উদ্ধার করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে আটটায় গাজীপুরের টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায়।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে মাসুদা বলেন, তাঁর স্বামী হাবিবুর রহমান আগেও একটি বিয়ে করেছেন। গতকাল রাতে তাঁর আগের স্ত্রী, সন্তান ও অপরিচিত একজনকে নিয়ে তিনি বাসায় আসেন। দরজা খুলতেই বিছানায় ফেলে স্কচটেপ দিয়ে তাঁর হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলা হয়। পরে একটি খালি কার্টনে ভরে নদীতে ফেলে দিয়ে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। জানতে পেরে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে প্রাণে বেঁচে যান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, রাত সাড়ে আটটার একটু পরে মাসুদার ঘরের সামনে গিয়ে দেখেন দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। দরজায় পরপর কয়েকবার আঘাত করলে ভেতর থেকে একজন দরজা খুলে দেন। এরপর ভেতরে গিয়ে দেখেন, মাসুদা হাত-পা বাঁধা অবস্থায় খাটে পড়ে আছেন। পরে বাঁধন খুলে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

এদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ করেছেন মাসুদা। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে যায় টঙ্গী পূর্ব থানার পুলিশ। মাসুদার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বামী হাবিবুরসহ সবাইকে থানায় নেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ মামলা না নিয়ে মীমাংসার কথা বলে মুচলেকায় মাসুদার সই নেয়। পরে আজ রোববার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মীর সহায়তায় আবার থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন মাসুদা। এরপর দুপুর ১২টার দিকে আবার ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। কিন্তু ততক্ষণে আসামিরা সবাই পালিয়ে যান।

মাসুদা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি মামলা করতে চাইলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। উল্টো মুচলেকায় সই নিয়ে আসামিকে ছেড়ে দিয়েছে। পুলিশ মামলা নিলে আসামিরা পালানোর সুযোগ পেত না।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত হাবিবুর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তাঁকে (মাসুদা) কিছুই করিনি। আমার ছেলেরা তাঁকে মারধর করার চেষ্টা করলে আমি বাধা দিই। হাত-পা-বাধা ও কার্টনে ভরার বিষয়টি পুরো মিথ্যা কথা। হয়তো আমার স্ত্রী ভুলে বলেছে।’

মামলা না নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রাতে তারা নিজেরাই বলেছে মামলা করবে না। কিন্তু সকালে এসেই আবার বলছে মামলা করবে। তখন আবার আসামিদের ধরতে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু আসামি পালিয়ে গেছেন। পরে এ ব্যাপারে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।