Thank you for trying Sticky AMP!!

পরীক্ষার ফরমেও ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি!

  • ফরমপ্রতি ৫০০ টাকা করে নিচ্ছে ছাত্রলীগ।
  • প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রকে বেধড়ক পিটুনি।

স্নাতক পরীক্ষার ফরম পূরণে বাড়তি টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় গতকাল সোমবার ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের এক ছাত্র। হামলার পর থেকে তিনি কানে ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছেন না। তবে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আহত রহিম ফরাজী ওই কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। তিনি বলেন, স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য ফি বাবদ কলেজের অগ্রণী ব্যাংক শাখায় ৪ হাজার ৬৭৫ টাকা জমা দিয়েছেন। এর রসিদও রয়েছে তাঁর কাছে। পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ফরমগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে বিনা মূল্যে সরবরাহ করার কথা থাকলেও সেগুলো সংগ্রহ করতে হয় কলেজের ছাত্রলীগের নেতাদের কাছ থেকে। প্রতি ফরমের জন্য ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়, যার কোনো রসিদও দেওয়া হয় না।

রহিম জানান, তিনি বামপন্থী ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ভুক্তভোগী আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী বাড়তি টাকা দিতে অনিচ্ছুক বলে তাঁকে জানান। এরপর তাঁরা বিষয়টা নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ শেখ আবদুল কুদ্দুসের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু অধ্যক্ষ কোনো সুরাহা করতে পারবেন না বলে জানান। এরপরে তিনিসহ কয়েকজন এ নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ছাত্রসংসদে যান। সেখানে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার নেতারা রহিম ফরায়েজিকে মারধর শুরু করেন। মারধরের নেতৃত্বে ছিলেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা।

আক্রান্ত রহিমের অভিযোগ, মারধরের পর থেকে তিনি বাম কানে ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছেন না। তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁর কানের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

ঘটনার বর্ণনা দিতে দিতে কেঁদে ফেলেন এই যুবক। তিনি বলেন, ‘ভাই, আমি ভয় পাই না। তবে ওরা খুব মারছে। আমারে বলছে, এখানে আটকে শিবির বলে পুলিশে ধরায়ে দেবে। পরে কয়েকজন আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলেছে, এখানে আর না আসতে। কিন্তু আমার তো পরীক্ষা আছে।’ রহিম বলেন, অসুস্থতার কারণে এসএসসি পরীক্ষার আগে ও পরে তাঁর শিক্ষাজীবনে চার বছরের ছেদ পড়েছিল। এখন একজনের বাড়িতে লজিং থেকে টিউশনি করে চলছেন।

কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, এসব অসত্য অভিযোগ। রহিমের সঙ্গে কলেজের বাইরে কারও বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছিল। সেটার দায় তো আর ছাত্রলীগের নয়। বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগও ঠিক নয়।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কলেজের অধ্যক্ষ শেখ আবদুল কুদ্দুস বলেন, ফরম তো বিভাগগুলো থেকে দেওয়ার কথা। অন্য কারও তো দেওয়ার কথা নয়। মারধরের অভিযোগ শুনে তিনি বলেন, ‘কই আমার কাছে তো কেউ অভিযোগ করল না। আমি বিকেল পর্যন্ত তো কলেজেই ছিলাম।’