Thank you for trying Sticky AMP!!

পুলিশই সিগারেট এনে দিল দুই কিশোর আসামিকে

সিগারেট চাইলে পুলিশ সদস্যই তা কিনে দেন কিশোর এক আসামিকে। ছবি: আসাদুজ্জামান

‘স্যার, আমি সিগারেট খাব’ 

পুলিশ কনস্টেবল সাইদুল ইসলামকে এই কথা বলল এক কিশোর আসামি। যার গায়ে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের টি–শার্ট।
কনস্টেবল সাইদুল তখন একটি সিগারেট ধরিয়ে ওই কিশোর আসামির হাতে ধরিয়ে দিলেন।
কিশোর আসামি সিগারেট টানতে লাগল।
এই কিশোর আসামির সিগারেট টানা শেষ না হতে সেখানে হাজির আরেক কিশোর আসামি।
সে আরেক পুলিশ কনস্টেবল আকরামকে বলল, ‘আমিও সিগারেট খাব।’
কনস্টেবল আকরামও দিব্বি সিগারেট ধরিয়ে ওই কিশোর আসামির হাতে ধরিয়ে দিলেন। দুই কিশোর আসামি তখন সিগারেট টানতে থাকল।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে আজ মঙ্গলবার বিকেলের চিত্র এটি।

এ ব্যাপারে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু প্রথম আলোকে বলেন, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা দুজন কিশোরকে ঢাকার আদালতে হাজির করার পর তাদের ধূমপান করার সুযোগ করে দিয়ে পুলিশ বেআইনি কাজ করেছে। এটা তারা কোনোভাবে করতে পারে না। এই দুই কিশোরকে ঢাকার আদালতে আনা–নেওয়ার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

শিশুদের সিগারেট টানার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশ কনস্টেবল সাইদুল ইসলাম ও আকরাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিশোর আসামিরা বারবার করে সিগারেটের জন্য আবদার করছিল। আমাদের সামনে সিগারেট টেনেছে। ধূমপান করার এই সুযোগ করে দেওয়াটা আমাদের ঠিক হয়নি।’ এই তিন পুলিশ কনস্টেবল গাজীপুর মহানগর পুলিশে কর্মরত আছেন।

হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নেওয়া হচ্ছে আরেক কিশোর আসামিকে। ছবি: আসাদুজ্জামান

দুই কিশোরই মারামারির মামলায় গত ডিসেম্বর মাসে আটক হয়। এরপর থেকে তারা টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে আছে।

বিকেল পাঁচটার দিকে দুই কিশোরকে বাসে করে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে নিয়ে যান তিন পুলিশ কনস্টেবল সাইদুল ইসলাম, আকরাম হোসেন ও মনিরুল ইসলাম। দুই কিশোরের হাতে তখন হাতকড়া পরানো ছিল।

দুই কিশোরকে ধূমপান করার সুযোগ করে দেওয়া এবং হাতকড়া পরানোর অভিযোগের ব্যাপারে ঢাকার আদালতে কর্মরত সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘চরম অন্যায় কাজ করেছেন পুলিশ সদস্যরা। এটা কোনোভাবে তাঁরা করতে পারেন না। বারবারই পুলিশকে বলে দেওয়া হয়েছে, তারা যেন কোনো অবস্থাতে শিশু-কিশোর আসামির হাতে হাতকড়া না পরায়। আর দুই কিশোর আসামিকে ধূমপান করার সুযোগ করে দিয়ে পুলিশ চরম অন্যায় করেছে।’

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কিশোর আসামিদের আদালতে আনার পর তাঁদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় না। যেসব পুলিশ সদস্য কিশোর আসামিদের আনেন, তাঁরা সরাসরি আদালতে হাজির করেন। যে কারণে কিশোর আসামিদের দেখভাল করার সুযোগ তাঁদের নেই।