Thank you for trying Sticky AMP!!

ফাঁকা গুলি ছোড়া হলেও এজাহারে উল্লেখ নেই

মঘি ইউপির চেয়ারম্যানের ছেলের লোকজন হামলার পর গুলি ছোড়েন। পুলিশ গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। তবে মামলায় এ বিষয়ের উল্লেখ নেই।

মাগুরা সদর উপজেলার মঘি ইউনিয়নে গত সোমবার রাতে স্থানীয় এক ব্যক্তির ওপর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের ছেলের লোকজনের হামলার ঘটনায় গত মঙ্গলবার মামলা হয়েছে। হামলার শিকার কৃষক ওই মামলা করেছেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলার সময় ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। হামলাকারীরা মঘি ইউপির চেয়ারম্যানের ছেলে পলাশ হোসেনের লোকজন। পলাশ হোসেনও ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন। তবে মামলার এজাহারে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়নি।

এজাহারে উল্লেখ না করলেও মামলার বাদী ও কৃষক হাফিজার লস্কর জানিয়েছেন, ঘটনার সময় গুলি ছোড়ার শব্দ তিনি শুনেছেন। তবে কে গুলি ছুড়েছেন, তা তিনি দেখেননি। এ কারণে এজাহারে বিষয়টি উল্লেখ করেননি। অন্যদিকে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার হয়েছে, যা দুটি পিস্তল থেকে ছোড়া হয়। প্রাথমিক তদন্তে পিস্তল দুটি অবৈধ বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

পলাশ হোসেন মঘি ইউপির চেয়ারম্যান হাসনা হেনার ছেলে। পুলিশ ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত আটটার দিকে ইউনিয়নের আঙ্গারদাহ গ্রামের মধ্যপাড়ায় একটি জমিতে চেয়ারম্যানের ছেলের মালিকানাধীন পলাশ ব্রিকসের জন্য মাটি কাটার একটি খননযন্ত্র আনা হয়। তবে মাটি আনা–নেওয়ার পথে আবাদি জমি নষ্ট হবে, এই আশঙ্কায় এলাকাবাসী তাতে বাধা দেন। এ সময় বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে আঙ্গারদাহ গ্রামের হাফিজার লস্কর নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে জখম করেন চেয়ারম্যানের ছেলের লোকজন। এ সময় ওই ব্যক্তির চিৎকারে গ্রামের আরও লোকজন সেখানে জড়ো হন। এমন পরিস্থিতিতে অন্তত ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়।

এ ঘটনায় হাফিজার লস্কার বাদী হয়ে মঙ্গলবার সদর থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। মামলায় মাগুরা সদর উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামের আলতাফ হোসেন, মঘি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জিল্লুর রহমান, শহরের দোয়ারপাড় এলাকার তোতা ওরফে পঙ্খীসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। তবে এজাহারে গুলি ছোড়ার ঘটনার উল্লেখ করা হয়নি।

বাদী হাফিজার লস্কর বলেন, ‘আমাকে কোপ দেওয়ার পরে উরা ফায়ার করে। পরপর ছয়টা গুলির শব্দ শুনি। তবে কারা গুলি করেছে, তা জানি না।’ মামলায় গুলি ছোড়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ না থাকার বিষয়ে লস্কর বলেন, ‘সে (পলাশ হোসেন) অন্যায় কিছু বলেনি। আমার সাথে ভালোভাবেই কথা বলছিল। তার সাথে থাকা অন্যরা আমার ওপর হামলা চালায়। গুলি কে ছোড়ে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।’

গোলাগুলির ঘটনা সঠিক কি না, সে বিষয়ে পুলিশ উপসংহারে পৌঁছাতে পারেনি। গুলির খোসা কোথা থেকে এল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
খান মুহাম্মদ রেজোয়ান, পুলিশ সুপার, মাগুরা

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে ছয়টি গুলি ছোড়া হয় দুটি আলাদা পিস্তল থেকে। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে পিস্তল দুটি অবৈধ বলেও নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে ওই কর্মকর্তা জানান, আসামি আলতাফ হোসেন ও তোতা দুটি পিস্তল থেকে গুলিগুলো ছোড়েন। তোতা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাঁর নামে একাধিক মামলা আছে।

তবে মাগুরার পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান বলেন, গোলাগুলির ঘটনা সঠিক কি না, সে বিষয়ে পুলিশ উপসংহারে পৌঁছাতে পারেনি। গুলির খোসা কোথা থেকে এল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

আর হামলার বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে পলাশ হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাঁর মা ও ইউপি চেয়ারম্যান হাসনা হেনা মুঠোফোনে বলেন, এক ব্যক্তির কাছ থেকে মাটি কিনেছিলেন পলাশ। সেই মাটি কাটতেই গিয়েছিলেন। সেখানে তেমন কিছুই হয়নি। গুলি ছোড়ার বিষয়ে বলেন, ‘এমন কিছু শুনিনি।’