Thank you for trying Sticky AMP!!

ফুটপাতের ওপর তিনতলা স্থাপনা

মার্কেটের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে ফুটপাতে তিনতলা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। প্রথম আলো

গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের পশ্চিম পাশে ফুটপাতের ওপর তিনতলা একটি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ফুটপাতটি সংকুচিত হয়ে গেছে। পথচারীদের চলাচলও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এ স্থাপনাটি উচ্ছেদে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। কিন্তু সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেট সমিতির নেতাদের বাধার কারণে সেটি পুরোপুরি উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। স্থাপনাটির বাকি অংশে এখন চলছে বাণিজ্যিক কার্যক্রম।

এই মার্কেটের সাধারণ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চার বছর আগে মার্কেটের নকশাবহির্ভূতভাবে এই স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এতে মার্কেটটির পরিবেশন নষ্ট হয়েছে। মার্কেটের ওই অংশ দিয়ে ঠিকমতো আলো-বাতাস ঢুকছে না। কেনাকাটা করে জিনিসপত্র নিয়ে মার্কেটের ওই অংশ দিয়ে ঠিকমতো চলাচল করতে পারেন না ক্রেতা বা পথচারীরা। এ কারণে অবৈধ স্থাপনাটি অবিলম্বে উচ্ছেদের দাবি করছেন তাঁরা।

ডিএসসিসির সম্পত্তি বিভাগ সূত্র জানায়, সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের ওই অংশটি আগে ফাঁকা ছিল। ফুটপাত ছিল প্রশস্ত। এর আয়তন প্রায় ৩০০ বর্গফুট। ২০১৪ সালের দিকে ওই স্থানে তিনতলার স্থাপনাটি তৈরি করেন সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেট সমিতি। এরপর সেখানে তারা পৃথক তিনটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেয়। ২০১৬ সালের জানুয়ারির দিকে স্থাপনাটি উচ্ছেদে অভিযান চালায় ডিএসসিসি। এ সময় তৃতীয় তলার ছাদ ও দেয়াল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে মার্কেট সমিতির নেতাদের বাধার কারণে বাকি অংশ উচ্ছেদ করা হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসসিসির সম্পত্তি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এই স্থাপনাটির বাকি অংশ উচ্ছেদ ২০১৬ সালের জুন মাসের দিকে আবার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মার্কেট সমিতির নেতাদের বাধা ও উচ্চ পর্যায়ের তদবিরের কারণে তা স্থগিত রাখা হয়। এরপর থেকে স্থাপনাটি এভাবেই পড়ে আছে। নতুন করে উচ্ছেদের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে নর্থ সাউথ রোডের ফুটপাতের ওপর আছে এই স্থাপনাটি। এর নিচতলায় ফটকে তালা লাগানো। দ্বিতীয় তলায় প্রায় ৩০০ বর্গফুট জায়গায় আছে ‘ওয়ার্ল্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামে একটি দোকান। তৃতীয় তলার ছাদ ও দেয়াল ভাঙা। তবে খুঁটিগুলো দাঁড়িয়ে আছে। সুন্দরবন মার্কেটের ভেতর দিয়েই এই স্থাপনাটিতে ঢোকার ফটক রাখা হয়েছে। এ ছাড়া এ স্থাপনার উত্তর পাশে আরও প্রায় ১০০ বর্গফুটের বেশি জায়গা দখল করে তৈরি করা হয়েছে এই মার্কেটের জেনারেটর ঘর।

ওয়ার্ল্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী হাসান আলী বলেন, তিনি প্রায় চার বছর আগে এম এ সালাম চৌধুরী নামে এই মার্কেটের এক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে দোকানটি ভাড়া নিয়েছেন। অন্যদিকে এম এ সালাম চৌধুরী বলেন, তিনি মার্কেট সমিতির সঙ্গে জড়িত নয়। জসিম নামের এক লোকের কাছ থেকে তিনি এই জায়গাটি কিনেছেন। তবে জসিমের বিস্তারিত পরিচয় তিনি দিতে পারেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, এই স্থাপনাটি মার্কেট সমিতির তত্ত্বাবধানেই নির্মাণ করা হয়েছিল। পরে বিভিন্নজনের কাছে তা বিক্রি ও ভাড়া দেওয়া হয়। সে টাকা সমিতির উচ্চ পর্যায়ের লোকজন ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। এখন যাঁরা জায়গা (পজিশন) কিনেছেন বা ভাড়া নিয়েছেন তাঁরা বিপাকে পড়েছেন।  

জানতে চাইলে সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম বলেন, এই মার্কেটে মালিক সমিতির দুটি পক্ষ আছে। তার বিপক্ষের লোকজনই এসব অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছে। তাই মূল নকশার বাইরে যত স্থাপনা আছে সেগুলো সিটি করপোরেশনকে ভেঙে দিতে হবে। তবে তার বিপক্ষের লোকজন বা দল কারা তাদের পরিচয় তিনি বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।  

ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, এই স্থাপনাটির বিষয়ে তিনি অবগত নন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। যদি স্থাপনাটি ফুটপাতের ওপর নির্মিত হয়ে থাকে, যত দ্রুত সম্ভব সেটি উচ্ছেদ করা হবে।