Thank you for trying Sticky AMP!!

বখাটের ভয়ে চার বোনের পড়াশোনা বন্ধের পথে

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বখাটেদের ভয়ে এক পরিবারের চার বোনের পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। কয়েক দিন আগে এক বোনকে অপহরণের চেষ্টা করে উত্ত্যক্তকারীরা। এরপর থেকে চার বোন স্কুল-কলেজ ও কোচিংয়ে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বেরোতে পারছে না। বখাটেদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ও থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

উত্ত্যক্তের শিকার ওই চার বোনের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার একটি গ্রামে। চার বোনের মধ্যে একজন গৌরীপুর উপজেলার একটি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। বাকি তিন বোনের একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী, একজন সপ্তম শ্রেণিতে আর সবার ছোটটি পড়ে তৃতীয় শ্রেণিতে।

পুলিশ ও পরিবারের অভিযোগ, প্রতিবেশী বখাটে মো. দেলোয়ার (২৫) চার বোনের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরীকে প্রায় এক বছর ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। কিশোরী দেলোয়ারের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রথমে তাকে স্কুলে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করতেন। পরে ওই কিশোরীর বাকি তিন বোনকেও উত্ত্যক্ত করা শুরু করেন দেলেয়ার ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। এক সপ্তাহ ধরে চার বোন বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না।

চার বোনের পরিবারের অভিযোগ, গত ২৫ নভেম্বর এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরী স্থানীয় বাজারে শিক্ষকের কাছে পড়তে যাওয়ার সময় দেলোয়ার ও তাঁর লোকজন কিশোরীকে অপহরণের চেষ্টা করেন। মেয়েটিকে মারধর করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা তুলে নিয়ে যান তাঁরা। কিছু দূর যাওয়ার পর অটোরিকশা থেকে তাঁকে নামিয়ে দেন। ওই দিন কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে গৌরীপুর থানায় মৌখিক অভিযোগ করা হয়।

গত শুক্রবার কিশোরীর বাবা গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মর্জিনা আক্তারের কাছে অভিযোগ করেন। পরে ইউএনওর পরামর্শে গৌরীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর থেকে দেলোয়ার ও তাঁর সহযোগিরা গা ঢাকা দেন। পুলিশ দেলোয়ার ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় চার বোন ও তাদের পরিবার আতঙ্কে আছে।

এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরীর ভাষ্য, দেলোয়ারের ভয়ে এখন সে ঘর থেকে বের হতে পারছে না। সামনে তার এসএসসি পরীক্ষা। এভাবে আতঙ্কের মধ্যে থেকে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছে সে।

চার বোনের বাবা বলেন, ‘আমার মেয়েরা বাড়ি থেকে বের হলেও দেলোয়ার ও তার সহযোগীরা নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে। প্রশাসন ও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। দেলোয়ার পুলিশের ভয়ে একটু সতর্ক থাকলেও সে এলাকায় থাকে। এখনো সুযোগ পেলে বাড়ির সামনে এসে কটূক্তি করে।’

অভিযুক্ত দেলোয়ারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তাঁর পরিবারের কারও সঙ্গেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

গৌরীপুরের ইউএনও মর্জিনা আক্তার বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার আহমেদ বলেন, পুলিশ অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। অভিযুক্ত দেলোয়ারকে ধরতে পুলিশ গতকাল রোববার অভিযান চালায়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি।