Thank you for trying Sticky AMP!!

বন্ধুত্ব গড়ে হত্যা

পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার সিজান হত্যার অভিযোগে ইমন (১৯) ও মুন্না মিয়া (১৮) নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ছবি : সংগৃহীত

পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় থাকত সিজান ওরফে বক্সার নামে ১৫ বছর বয়সী কিশোর। সে গ্রিল ওয়ার্কশপ কর্মচারী হিসেবে নাজিরা বাজার এলাকায় কাজ করত। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একই এলাকার ইমন (১৯) ও মুন্না মিয়ার (১৮) সঙ্গে বিরোধ ছিল সিজানের। বিরোধ ভুলে যাওয়ার কথা বলে প্রথমে বন্ধুত্ব গড়ে পরে ছুরিকাঘাত করে সিজানকে হত্যা করেন ইমন। কিন্তু হত্যার পর আলামত পাওয়া যায়নি।

আলামতহীন এই হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সিজান হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ও মুন্না মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, ৭ মার্চ রাত পৌনে ১১টার দিকে কাজ শেষ করে নিজের বাসায় আসে সিজান। রাতের খাবার খাওয়ার পর মোবাইলে কল আসার পর বাইরে যায় সে। এরপর রাত সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক ব্যক্তি সিজানের পরিবারকে ফোনে জানান, সিজান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তার জন্য রক্তের প্রয়োজনের কথা জানিয়ে তাঁদের দ্রুত হাসপাতালে যেতে বলেন তিনি। পরে সিজানের পরিবারের লোকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে তাঁরা সিজানকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান। এর কিছুক্ষণ পর রাত সোয়া দুইটার দিকে সিজান মারা যায়। পরে জানা যায়, বকশীবাজার রোডে (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দক্ষিণ পাশে) পাকা রাস্তার ওপর কয়েকজন লোক সিজানকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। এক রিকশাচালক তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালের গেটে রেখে চলে যান। এ ঘটনায় সিজানের বাবা মুকুল মিয়া অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে চকবাজার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে থানা–পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) একটি বিশেষ দল অভিযান শুরু করে। দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের পর সিজান হত্যা-রহস্য বেরিয়ে আসে।

পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বংশাল ও চকবাজার থানাধীন সুরিটোলা, চানখারপুল ও মালিটোলা এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এসব গ্রুপের মধ্যে একটি ছিল ইমন-সমর্থিত। আরেকটি গ্রুপ ছিল সিজান-সমর্থিত। এই গ্রুপ দুটির মধ্যে অনেক দিন ধরেই বিরোধ ছিল । প্রায় দেড় মাস আগে এলাকায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সিজানের সঙ্গে ইমনের কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সিজান গ্রুপের লোকজন ইমনের গ্রুপের একজনকে ছুরিকাঘাত করে আহত করে। তখন থেকেই ইমন, মুন্নাসহ আরও কয়েকজন সিজানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে সব ভুলে যাওয়ার কথা বলে সিজানের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়েন ইমন ও তাঁর সহযোগীরা। এর পরই সিজানকে ডেকে হত্যা করেন তাঁরা। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত অন্য সহযোগী আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।